খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল :- করোনা দুর্যোগে বিভিন্ন অনলাইন ক্লাস শুরু হয়েছে। উচ্চবিত্তরা গৃহশিক্ষক রেখে বা অনলাইন ডিভাইস দিয়ে তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। এমনকি শিক্ষিত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাও বাবা-মায়ের মাধ্যমে পড়াশুনা করে যাচ্ছে। কিন্তু হতদরিদ্র এবং সাধারণ শ্রমিক পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনা থেকে পুরোপুরিই পিছিয়ে পরছে।
এসব সুবিধাবঞ্চিত ছেলে-মেয়েরা যেন শিক্ষার আঙিনা থেকে ঝরে না পরে এবং অন্যান্য সহপাঠিদের তুলনায় পিছিয়ে না পরে। সেই উদ্দেশ্যে নিয়েই তাদের কাছে শিক্ষা পৌঁছে দিতে শুরু হয়েছে ‘মানবতার পাঠশালা’র কার্যক্রম।
‘করোনায় থামবে না পড়া’ শ্লোগানকে সামনে রেখে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও ছাত্র ফ্রন্টের আয়োজনে চালু হয়েছে ‘মানবতার পাঠশালা’। বাসদের জেলা শাখার সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী বলেন, নগরীর বিভিন্ন বস্তি এলাকার শ্রমিকদের সন্তানদের উন্মুক্ত মাঠে বা বড় হলঘরে শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ পাঠশালায় পড়াশোনা শেখানো হচ্ছে। পাঠশালার শিক্ষকগণ স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বিনা বেতনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন।
ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী আরও বলেন, সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে ছাত্রফ্রন্টের সদস্য এবং স্বেচ্ছাসেবকরা মিলে মানবতার পাঠশালায় স্বেচ্ছাশ্রম দিতে রাজি হয়েছেন ১৫০জন শিক্ষক। তারা সবাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বিএম কলেজ, সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী।
গত ১০ জুন বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর ফকির বাড়ি রোডস্থ বাসদ বরিশাল শাখার কার্যালয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ‘মানবতার পাঠশালা’র উদ্বোধক বাসদের জেলা শাখার আহবায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবীব রুমন বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে একটি করে স্কুলসহ বস্তি এলাকায় এই ‘মানবতার পাঠশালা’র মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। ইতোমধ্যে রসুলপুর, চাঁদমারী, কাশীপুর, রূপাতলী ও বাঘীয়া এলাকায় মানবতার পাঠশালার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
প্রতিটি পাঠশালার শিক্ষার্থীদের মাঝে খাতা, কলমসহ শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হয়। মানবতার পাঠশালা পরিচালনার জন্য সামর্থ্যবানদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য বই, খাতা, কলমসহ অন্যান্য সহযোগিতার জন্য (০১৭৯৭-১৪৬৪৬৯ এবং ০১৭৮০-৫৭৯১৪৬) মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।