মোঃ হোসেন আলী, কোটালিপাড়া (গোপালগঞ্জ) থেকেঃ- মহামারি করোনাভাইরাস ক্রান্তিকালে প্রশাসনিক বাঁধা সত্বেও থেমে ছিলনা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার আড়াইশ বছরের ঐতিহ্যবাহি বিলবাঘীয়ার নৌকা বাইচ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উপজেলার কালিগঞ্জবাজার সংলগ্ন খালে বিশ্বকর্মা পূঁজা উপলক্ষে হাজার বছরের ঐতিহ্য বিলবাঘীয়র নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা দেখার জন্য সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা এসে খালের পাড়ে ভিড় জমায়। প্রায় তিন কিলোমিটার দির্ঘ এই নৌকাবাইচ অনুষ্ঠীত হয়েছে।
সকাল থেকেই দলে দলে দুর -দুরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় জমায় খালের দু পাড়ে। এবছর করোনার জন্য নৌকা অনেক কম হয়েছে বলে আনেকের ধারনা। এই নৌকাবাইচের অংশগ্রহণ করা উল্লেখ্য যোগ্য নৌকা গুলো মধ্য বাছাড়ি,জয়নাগরি,কোষা,টালী, ও ছান্দী। অনেকদুর থেকে আসে নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করার জন্য।প্রায় তিন ঘন্টা ব্যপি চলতে থাকে নৌকাবাইচের প্রতিযোগীতা।টিকারা ,কারা ও কাশির, বাদ্যে যেন মুখরিত হয়ে ওঠে প্রতিটি হৃদয়। প্রকুতির নিয়মেই পশ্চিম দিগন্তে সূর্যের আলো নেমে পড়ে আসে অন্ধকার।মাঝি-মাল্লারা সুর দিয়ে জারিগান ,সারিগান এবং ভাটিয়ালিগান গান গাইতে গাইতে চলে যায় যে যার আপন ঠিকানায়।
নৌকাবাইচ উপলক্ষে খালের পাড়ে মেলা বসে। বাহারি সব দোকানপাট,মনোহরি,চানাচু,খেলনা ,নাগোরদোলা,ইত্যাদি সবমিলিয়ে যেন বাঙ্গালীর এক মিলন মেলা।
রাজৈর থেকে নৌকা বাইচ দেখতে আসা সুব্রব বিশ্বাস বলেন, নৌকা বাইচের শুরুর থেকে প্রশাসনিক একটা চাপ ছিল পরে অনেক লোক জনের সমাগম ঘটায় নৌকা বাইচ ঠিক মত অনুষ্টিত হয়েছে , তবে এবছর বিগত বছরের চেয়ে তুলনা মুলক নৌক অকে কম হেয়েছে।
বুরুয়া থেকে নৌকা বাইচ দেখতে আসা ক্ষনা রানী হাজরা বলেন,এ বছর দোকানপাট কম হয়েছে কিন্ত নৌকাবাইচ অনেক ভাল হয়েছে লোকজনও অনেক বেশী হয়েছে। একবছর নৌকা বাইচ দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি।
নৌকাবাইচ উপলক্ষ্যে কলাবাড়ী উইনিয়নের চেয়ারম্যান মাইকেল ওঝা বলেন,মহামারি করোনা ভাইরাস উপলক্ষ্যে প্রশাসনিকভাবে নৌকাবাইচ বন্ধ করারা ঘোষনা দিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী বিলবাঘিয়ার নৌকা বাইচ এটা প্রায় আড়াইশ বছর থেকে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রশাসনিক ভাবে হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা আসায় দুর্দান্ত থেকে না জেনে লোকজন চলে আসায় কোন রকম ভাবে নৌকা বাইচটি অনুষ্ঠিত হয়েছে