বিশেষ প্রতিনিধি।। সাভারে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মোস্তাফিজার রহমান (৩২) হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল সোমবার গভীর রাতে সাভারের রাজাশন এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৪ এর একটি দল।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জ থানার নিজাম শরীফের ছেলে আজাদ শরীফ (২৯) ও সাভারের ডগরমোড়া এলাকার আব্দুল গণির ছেলে রনি ওরফে ডগি রনি (৩০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৪ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার উনু মং বলেন, উন্নত প্রযুক্তির সহায়তায় জড়িতদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা পেশাদার ছিনতাইকারী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই সাবেক শিক্ষার্থী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
গত ২৪ অক্টোবর ভোরে সাভারের শিমুলতলায় বাস থেকে নামা মাত্রই ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০১৯ সালের স্নাতকোত্তর ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাফিজার রহমান। তিনি রাজশাহী জেলার দূর্গাপুর থানার নওয়াপাড়া গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে।
মোস্তাফিজার সাভারে গ্লোরিয়াস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছিলেন। থাকতেন ঘটনাস্থলের অদূরে ডগরমোড়া মহল্লায়। স্ত্রী খাদিজা বেগম ও এক বছরের ছেলে মুসাকে নিয়ে সাভারে বসবাসের জন্য বাসাও ভাড়া করেছিলেন তিনি। তবে আসার দিন সন্তানের জ্বর থাকায় পরিবার ছাড়াই ঢাকার পথে রওনা দেন তিনি।
পরিবারের সদস্যরা জানান, গ্রাম থেকে ধার দেনা করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলেন মোস্তাফিজ। ছিনতাইকারীরা সেই টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার পর তাদের পিছু নেন তিনি। ঘটনাস্থলের পাশে একটি সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, তিন ছিনতাইকারী তাকে এলোপাতাড়ি ও উপর্যুপরি কুপিয়ে সঙ্গে থাকা একটি ব্যাগ ছিনতাই করে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন।
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করলে তৎপর হয় সাভার মডেল থানা পুলিশ, র্যাব ও পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন। হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পরে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সাভার মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা মজিবুর রহমান।
তিনি জানান, ঢাকায় আসার গাড়ি ভাড়াও ছিল না তাদের সঙ্গে। রাজশাহীর পুলিশ সুপারের সহায়তায় তিনি ঢাকায় এসেছেন।
ভীত কণ্ঠে মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমি চাই আর কোনো বাবা যেন আমার মতো সন্তানহারা না হয়। পুলিশকে বলেছি, আপনারা ব্যবস্থা নেন। খুনিদেরকে যেন দ্রুত ধরা হয়, যেন উপযুক্ত বিচার হয়। তার মতো এভাবে সন্তান হারানোর কষ্ট যেন অন্য বাবাদের না হয়।’