বিশেষ প্রতিনিধি।। চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নছিমনের চালক ও দুই আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনের প্রায় এক কিলোমিটার দূরে বাড়ির কাছে আলীনগর হাজির মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আরো ৯ জেলায় গত সোমবার রাতে ও গতকাল সড়ক দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত ও অন্তত ২৭ জন আহত হয়েছেন। নওগাঁর ধামইরহাটে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দুই থেকে চারজন হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে নিহতরা হলেন শহরের আলীনগর ভূতপুকুর মহল্লার মৃত আব্দুল গনি ওরফে গরিবুল্লার ছেলে মো. ফুলচান (৪৯), একই মহল্লার মৃত রইসউদ্দিনের ছেলে সেহের আলী (৪৫) ও সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আমনুরা কেন্দুল গ্রামের মানিক চাঁদের ছেলে মো. নাইমুল (৩৯)। নাইমুল নছিমনচালক ও অন্য দুজন মাছ ব্যবসায়ী। সম্পর্কে এই মামা-ভাগ্নে সকালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউ মার্কেট মাছের বাজারে মাছ বিক্রি করে বাড়ি ফিরছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) হাবিলদার মো. নাসিম বলেন, সকাল পৌনে ৯টার দিকে রেললাইনের ওপর নছিমনটি আটকে যায়। এ সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনটি নছিমনটিকে ধাক্কা দিয়ে ছেঁচড়ে কিছুদূর নিয়ে যায়। সেখানে নছিমনটি লাইনের ওপর আটকে যায় ও ট্রেনটি থেমে যায়। পরে ফায়ার সাভিসের কর্মীরা মরদেহ ও নছিমনটি উদ্ধার করে রেললাইনের পাশে রাখলে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে। ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ।
লেভেলক্রসিং মোড়ের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রেললাইনের সমান্তরাল সড়ক ধরে দ্রুতগতির নছিমনটি ডানে ঘুরে রেললাইন পার হচ্ছে। আর তখনই ট্রেনটি চলে আসে ও নছিমনটিকে ধাক্কা দিয়ে ছেঁচড়ে বেশ কিছুদূর নিয়ে যায়। নছিমনচালক হয়তো ধারণা করেছিলেন, ট্রেনে আসার আগেই তিনি লাইন পার হয়ে যেতে পারবেন। স্থানীয় অনেকে বলেন, লাইনে ওঠার সময় নছিমনের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শহিদুল আলম বলেন, ওই ক্রসিংয়ে কোনো গেট বা জনবল বরাদ্দ নেই। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এ কে এম গালিভ খান ও জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম। জেলা প্রশাসক তাত্ক্ষণিক নিহতদের পরিবারপিছু ২৫ হাজার টাকা অনুদান দেন। তিনি রেল কর্তৃপক্ষকে অরক্ষিত ক্রসিংয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।