বিশেষ প্রতিনিধি।। নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তা মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে পড়ে। এতে চারদিকে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তা মর্গ্যান গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে পড়ে।
নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের ছোড়া কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে পড়েছে। এতে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪০ শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে শহরের দেওভোগ মর্গ্যান বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া ৪২ ছাত্রীর মধ্যে ১২ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডিআইটি বাণিজ্যিক এলাকায় নগর পাঠাগারের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। পৌনে ১১টার দিকে পুলিশ ধাওয়া দিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা মর্গ্যান বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের দিকের রাস্তা দিয়ে ঢুকে পড়েন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করতে শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় পুলিশের ছোড়া তিন-চারটি কাঁদানে গ্যাসের শেল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ভেতরে পড়ে। এতে স্কুল শাখার ৪০ ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়ে।
স্কুলছাত্রী লামিয়ার বাবা হুমায়ুন কবির বলেন, স্কুলে পরীক্ষা ছিল। এভাবে পুলিশের টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়া ঠিক হয়নি। এতে তাঁর মেয়ের মতো অনেক বাচ্চা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
স্কুলছাত্রী আয়েশার খালা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, স্কুলের ভেতরে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার সময় কাঁদানে গ্যাসের কারণে তাঁর বোনের মেয়ে রোকেয়া বাসার সামনে সিঁড়িতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়ে। তাকে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাকে অক্সিজেন ও ইনজেকশন দিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন।
সায়মা সুলতানার মা পারভীন সুলতানা বলেন, ‘কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় পুরো স্কুল ভরে গেছে। এভাবে বাচ্চাদের স্কুলের ভেতরে কি কাঁদানে গ্যাসের শেল মারা যায়?’
মর্গ্যান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার প্রভাষক কবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের ছোড়া এলোপাতাড়ি কাঁদানে গ্যাসের শেল তাঁদের স্কুলের ভেতরে এসে পড়ে। এতে তাঁদের স্কুলের ৪০ ছাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। তাদের পানি দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করা হয়। তাদের মধ্যে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ায় ১২ জনকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরিয়া) ভর্তি করা হয়েছে।
মর্গ্যান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলেজ শাখার প্রভাষক কবির চৌধুরী আরও বলেন, তাঁদের স্কুলের সীমানাপ্রাচীর অনেক উঁচু, তারপরও পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপে আরও সর্তক হওয়া প্রয়োজন ছিল। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমীর খসরু প্রথম আলোকে জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ভবনের ওপরে উঠে পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়েন। পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়লে সেখান থেকে হয়তো পড়তে পারে। তিনি বলেন, বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কাঁদানে গ্যাসের শেলে আহত হয়ে বেশ কয়েক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে।