দুনিয়ার সফর অতি সংক্ষিপ্ত করে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬ টা ৪০ মিনিটে মাত্র ১৫/১৬ বৎসর বয়সে না ফেরার দেশে চলে গেল সুমন। এমন হাসি মাখা মুখে সুমনকে আর দেখা যাবে না।
পুরো নামটি মোঃ আজিজুল হক সুমন। দক্ষিন চর হোগলপাতিয়া দাখিল মাদ্রাসা থেকে ২০২২ সালের দাখিল পরীক্ষার্থী ছিল।ফরম ফিলাপ হলেও দেয়া হয়নি পরীক্ষা। যেখানে চিকিৎসার অভাবে বেঁচে থাকাই দায়, সেখানে পরীক্ষা কি করে দেয়া হয়?
তার মৃত্যু জানিয়ে দিয়ে গেল, শুধু তিনিই মারা যান নাই, মানবতাও মারা গিয়েছে। মারা গিয়েছে মানুষের বিবেক।
মানুষের চোখের দৃষ্টি থাকলেও তা আজ অন্ধ!
সুমনের মৃত্যু জানিয়ে দিয়ে গেল আমি আগে যাচ্ছি, তোমরা পরে আসতেছ!…
সুমনের মৃত্যু প্রতিবেশী সমাজ পতিরা দায় এড়াতে পারে না। দায় এড়াতে পারে না, ধনট্য পরিবারগুলো। যারা শুধু সম্পদের পাহাড় গড়ে নিজের জন্য। নিজের ভোগবিলাসের জন্য!( তবে সবাই নয়)!
সবাই নয়,কিছু বিত্তবান মানুষ তার চিকিৎসার জন্য এগিয়ে এসেছিলেন, কিন্তু চিকিৎসার খরচের তুলনায় তা ছিল খুবই নগণ্য …
তার চিকিৎসার জন্য অনেকের কাছে নক করেছিলাম কিন্তু আশানুরুপ সাড়া পাইনি!…
আপনি ধনাট্য, আপনি বিত্তবান, আপনার টাকা দিয়ে আপনার প্রতিবেশী গরিবরা যদি উপকৃত নাইই হয় তাহলে আপনার টাকা কার জন্য?
সন্তানের লাশ বাবার কাঁধে কত বড় বোঝা, তা শুধু ভুক্তভোগীই বুঝেন!
মন্নান ভাই তার পুত্রের চিকিৎসার ব্যাপারে কারো কাছে টাকার জন্য আর অনুনয় বিনয় করবেন না!
চিকিৎসার অভাবে শেষ পর্যন্ত বাবার সামনেই ছটফট করে পরপারে চলে গেল সুমন!
যারা তার চিকিৎসার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন, তার চিকিৎসার জন্য যারা এগিয়ে এসেছিলেন তাদের প্রতি মন্নান ভাইয়ের পরিবার কৃতজ্ঞ।
আজ বৃহস্পতিবার বাদ আছর ১ নংজাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের অন্তর্গত বটতলা ঈদগাহ ময়দানে তার জানাযার পরে তাকে তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
মহান আল্লাহ এই কিশোরকে জান্নাতুল ফেরদাউসের বাসিন্দা বানাইয়া দিক আমীন!
লেখকঃ আজিজুল হক, শিক্ষক।