পুলিশ ও আদালত সুত্রে জানা যায়, হাতীবান্ধা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন ও ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের মধ্যে গত ৭ নভেম্বর উপজেলা পরিষদের ভিতরে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, মারধর ও অফিস ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।
ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার দাবী করেন, টিআর, কবিখা-কাবিটা কাজের বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা চেয়ারম্যান তাকে অফিস থেকে বের করে দেয়। পরে তার লোকজন তাকে মারধর করে ও তার অফিসে হামলা চালায়।
উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুন সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ২০২০-২১ অর্থ বছরে এডিপি’র নারী ফান্ডে একটি প্রকল্পের হিসাব চাওয়ায় তাকে ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহার ও তার স্বামী অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে মারমুখী আচারণ করেন।
এ ঘটনায় ওই দিন রাতে জেসমিন নাহার বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনসহ ৮ জনকে আসামী করে হাতীবান্ধা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ১৪ নভেম্বর ১২ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ২ ভাইস চেয়ারম্যানও উপজেলা চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মামুনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন।
এ ঘটনার ১০ দিনেও ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন নাহারের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করায় বৃহস্পতিবার আদালতের আশ্রয় নেয় জেসমিন নাহার। ১২ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট বিজ্ঞ জুডিসিয়াল আদালত ৪-এ একটি অভিযোগ দায়ের করেন। আদালত ওই অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা হিসেবে গ্রহন করতে হাতীবান্ধা থানা পুলিশকে নিদের্শ দেয়। আদালতের নিদের্শ পেয়ে রাতেই অভিযোগটি নথিভুক্ত করেন হাতীবান্ধা থানা পুলিশ।
এ দিকে এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার সড়েজমিনে তদন্ত করেন জেলা প্রশাসক গঠিত তদন্ত কমিটি। ওই কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম হাতীবান্ধায় এসে উপজেলা চেয়ারম্যান, দুই ভাইস চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের সাক্ষ্য গ্রহন করেন।
হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম জানান, আদালতের নির্দেশ পাওয়া মাত্র আমরা এজাহারটি মামলা হিসেবে গ্রহন করে আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, ইতোমধ্যে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ওই কমিটি গত বৃহস্পতিবার থেকে তদন্ত শুরু করেছেন। পুরো বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।