★ সিসিটিভি অকার্যকর—নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ।

মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী, কালিয়াা, নড়াইল।। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।

উপজেলার পহরডাঙ্গা, সরসপুর, পাখিমারা, বল্যাহাটি, কচুয়াডাঙ্গা, মূলশ্রী, চাপাইল, বাগুডাঙ্গা ও চরমধুপুর—এক সময়ের নিরাপদ এসব গ্রাম এখন চোরচক্রের অবাধ তৎপরতায় পরিণত হয়েছে আতঙ্কের জনপদে।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, টিউবওয়েল, হাঁস–মুরগি, গরু-ছাগল, মোবাইল ফোন, থালা–বাটি, ঘরের সরঞ্জাম, নারকেল–সুপারি এমনকি ক্ষেতের ফসলও প্রায় প্রতিদিনই চুরি হচ্ছে। ফলে মানুষের রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।

মূলশ্রী গ্রামের বাসিন্দা আসলাম চৌধুরী জানান, সম্প্রতি তাঁর গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু চুরি হয়েছে। এতে তাঁর পরিবার চরম আর্থিক সংকটে পড়েছে।
কৃষক সোবহান শেখ বলেন, বাচ্চা হওয়ার উপক্রম একটি বকনা গরু শিকল কেটে নিয়ে গেছে চোরেরা।
মুয়াজ্জিন নিজাম মোল্লা জানান, মূলশ্রী পূর্বপাড়া মসজিদের দানবাক্স একাধিকবার ভেঙে টাকা নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
বল্যাহাটি গ্রামের বাগান মালিক লিটন সিকদারের ভাষায়, নারকেল–সুপারি চুরি এখন নিত্যদিনের ঘটনা—“বছরের পুরো ফসলটাই শেষ।”
চাপাইলের এক গৃহবধূ জানান, রাতের কোনো একসময় চোরেরা তাঁদের টিউবওয়েল খুলে নিয়ে গেছে।

এদিকে চুরি প্রতিরোধে গ্রামের তরুণ থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত পালাক্রমে রাত জেগে পাহারা দিলেও তেমন ফল মিলছে না। কৃষক নূর ইসলাম বলেন, “রাতভর জাগি, তবু চোরকে ধরা যায় না। মনে হয় সংগঠিত চক্র কাজ করছে।”

সিসিটিভি থাকলেও কার্যকারিতা নেই, ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন স্থানে সিসিটিভি স্থাপন করা হলেও এর বেশিরভাগই অকার্যকর। আলো স্বল্পতা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং নিয়মিত মনিটরিং না থাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যত নামমাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী হেলাল সিকদার বলেন, “ক্যামেরা আছে, কিন্তু কাজের নেই। ফুটেজও ঠিকমতো পাওয়া যায় না।”

একাধিক বাসিন্দা জানান, সন্ধ্যার পর বাইরে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘরের জানালা বন্ধ করেও ঘুমানোর সাহস পান না অনেকেই। শিশুদের মধ্যে তৈরি হয়েছে ভয় ও অস্থিরতা।

নিয়মিত ও বাড়তি পুলিশ টহল, সিসিটিভি মেরামত, গ্রাম পুলিশকে সক্রিয় করা এবং চোরচক্র ও তাদের আশ্রয়দাতাদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন ভুক্তভোগীরা। তাদের স্লোগান—“চুরি আর নয়, আমরা নিরাপদ জীবন চাই।”

নড়াগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানান, চোরচক্র শনাক্তে বিশেষ নজরদারি ও অভিযান চলছে। কয়েকজনকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন—চোরেরা এত সংগঠিত হলে এতদিনেও ধরা পড়ছে না কেন?

নড়াগাতীর পহরডাঙ্গা ইউনিয়নের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন প্রশাসনের দ্রুত উদ্যোগের অপেক্ষায়। সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

Share.

উপদেষ্টাঃ আলহাজ সিরাজ আহমেদ
প্রকাশক ও সম্পাদকঃ রফিকুল ইসলাম রনি
প্রধান সম্পাদকঃ ইব্রাহিম রুবেল
বার্তা সম্পাদকঃ আব্দুল বারী
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
যোগাযোগঃ
৬/সি, আনেমা ভিস্তা (৭ম ফ্লোর), ৩০ তোপখানা রোড, ঢাকা ১০০০।
মোবাইলঃ ০১৮২৪২৪১০২৩, ০১৭১৯২৬৪০৪৫

Exit mobile version