বরিশাল অফিস :- জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের ১৮টি দুঃস্থ পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল চার বছর ধরে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক ডিলারের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় সোমবার সকালে বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম অভিযুক্ত ডিলারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কালিহাতা গ্রামের বিধবা মাহফুজা বেগম জানান, গত চার বছর পূর্বে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তার নামে একটি রেশন কার্ড প্রদান করা হয় (কার্ড নং ২৮০)। সে অনুযায়ী তিনি দুইবার চাল উত্তোলণ করেছেন। এরপর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয়ে রেশন কার্ড জমা দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায় বামরাইল ইউনিয়ন খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ডিলার আব্দুল্লাহ আল মাতিন। সেই থেকে তিনি আর কোন চাল উত্তোলণ করতে পারেননি।
একই গ্রামের আব্দুল আজিজ জানান, গত কয়েকদিন আগে স্থানীয় ইউপি সদস্যর মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন তার নামে রেশন কার্ড রয়েছে। কিন্তু এপর্যন্ত একবারও তিনি কার্ডের চাল উত্তোলণ করতে পারেননি।
ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম জানান, গত চার বছরপূর্বে তার ওয়ার্ডের (কালিহাতা) দুঃস্থ পরিবারের নামের তালিকা ইউনিয়ন পরিষদে জমা দেয়া হয়। সেই অনুযায়ী ইউপি চেয়ারম্যান ডিলারের কাছে আমার ওয়ার্ডের কার্ড হস্তান্তর করেন। কিন্তু আমার ওয়ার্ডের পূর্ন তালিকা অদ্যবদি হাতে পাইনি। গত কয়েকদিন পূর্বে কার্ডের হালনাগাদের জন্য বলা হলে ডিলার আব্দুল্লাহ আল মাতিনের চাল আত্মসাতের বিষয়টি ধরা পরে। তিনি আরও জানান, ডিলার কর্তৃক কার্ড ও চাল আত্মসাতের বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ হাওলাদারকে জানানো হলেও ডিলার ইউপি চেয়ারম্যানের নিকটাত্মীয় হওয়ায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এছাড়াও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাকে জানানো সত্বেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ফলে ডিলারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বামরাইল ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড (ভরসাকাঠী) গ্রামের ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম বাদল জানান, তার ওয়ার্ডের চারজনের নামের কার্ড ও চাল আত্মসাত করছেন ডিলার। ৫নং ওয়ার্ড (সানুহার-আটিপাড়া) গ্রামের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, তার ওয়ার্ডের দুইজনের নাম তালিকায় থাকলেও কার্ড ও চাল পাননি। এভাবেই ওই ইউনিয়নের ১৮টি দুঃস্থ পরিবারের নামে বরাদ্দকৃত সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর চাল চার বছর ধরে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ওই ডিলারের বিরুদ্ধে।
চাল আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে ডিলার আব্দুল্লাহ আল মাতিন জানান, প্রতিপক্ষের লোকজনে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে নানা অপপ্রচার করছে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে।
ইউপি সদস্যর লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রণতি বিশ^াস বলেন, অভিযোগের তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।