বরিশাল অফিস :- জেলার আগৈলঝাড়া-পয়সারহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুল্লশ্রী বাইপাস বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশে করোনা সন্দেহে অসুস্থ্য বৃদ্ধাকে ফেলে রেখে সটকে পরেছে আপন ভাইয়ের ছেলে। উৎসুক জনতা সড়কের পাশে পরে থাকা বৃদ্ধাকে দেখতে ভীর জমালেও মনবতা বিবেক জাগ্রত না হওয়ায় চারঘন্টা পর থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার বিকেলে ।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭০ বছরের অসুস্থ্য বৃদ্ধা দীপু বালা জানান, তার স্বামী ও বাবার বাড়ি আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের আস্কর গ্রামে। স্বামী অশ্বিনী বালা চার বছর আগে মারা যান। দাম্পত্য জীবনে তিনি নিঃসন্তান। দীর্ঘদিন মানুষের বাসায় ঝিয়ের কাজ করে তিনি জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। বৃদ্ধ বয়সেও বর্তমানে তিনি বরিশাল নগরীর কাঠপট্টি রোডের ধীরেন সিকদারের বাসায় কাজ করতেন। ওই বাসায় কর্মরত অবস্থায় পাঁচদিন পূর্বে হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ্য হন। ধীরেন সিকদার স্থানীয়ভাকে ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ কিনে দেন। পরে খবর দেয়া হয় তার গ্রামের বাড়িতে।
আস্কর গ্রামের বাড়ি থেকে তার ভাই মনোরঞ্জন সাহার পুত্র মিথুন সাহা বরিশাল থেকে সোমবার বৃদ্ধা পিসিকে বাড়িতে আনতে গিয়ে গন্তব্য পয়সারহাট বাসস্ট্যান্ডে না নেমে পথিমধ্যে আগৈলঝাড়ার বাইপাস সড়কের বাসস্ট্যান্ডে নামেন। পরবর্তীতে বয়সের ভারে ও শারিরিক দুর্বলতার কারণে চলাফেরা করতে না পারা পিসি দীপু বালাকে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে সড়কের পাশে রেখে সটকে পরেন মিথুন। একপর্যায়ে অসুস্থ্য বৃদ্ধা সড়কের উপরেই শুয়ে পরতে বাধ্য হন। সাড়ে বারোটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত সময় গড়িয়ে গেলেও দেখা মেলেনি মিথুনের।
খবর পেয়ে আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আফজাল হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অসুস্থ্য বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওসি বলেন, হাসপাতালে অসুস্থ্য বৃদ্ধার সকল প্রকার চিকিৎসা, খাদ্য সহায়তাসহ আনুসাঙ্গিক সুবিধা তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রদান করবেন। ওসি মোঃ আফজাল হোসেন আরও বলেন, করোনা মোকাবেলায় মানুষের বিবেক জাগ্রত হওয়া দরকার। মানবিকতা বিবর্জিত হলে মাহামারী সংকট আরও ঘনিভুত হবে। বৃদ্ধার ভাইয়ের ছেলের অবহেলার বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ বখতিয়ার আল মামুন জানান, প্রাথমিকভাবে বৃদ্ধার করোনা উপসর্গ নেই বলে মনে হলেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে প্রেরণ করা হবে।