রাঙা প্রভাত অনলাইন ডেস্কঃ অক্সফাম বলছে, কয়েকটি ধনী দেশ কোভিড-১৯ রোগের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের অর্ধেকেরও বেশি ডোজ় কিনে ফেলেছে।
এখনো বাজারে আসেনি নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন, কবে আসবে তারও ঠিক নেই, এর মধ্যেই অর্ধেক ‘বুকিং’ হয়ে গেছে। মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে আগেভাগে এ কাজ সেরে ফেলেছে ধনী দেশগুলো। বেসরকারি সংস্থার অক্সফামের একটি সমীক্ষা থেকে জানা গেছে এমন তথ্য।
অক্সফামের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কিছু ধনী দেশ কোভিড-১৯ রোগের সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের অর্ধেকেরও বেশি ডোজ় কিনে ফেলেছে। জনসংখ্যার বিচারে গোটা বিশ্বের মাত্র ১৩ শতাংশ মানুষের বসবাস এসব ধনী দেশে। মূলত পাঁচটি ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের শেষের ধাপে রয়েছে। সংস্থাগুলো হলো অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা, গ্যামালিয়া, মডার্না, ফাইজ়ার ও সিনোভ্যাক। সংবাদ সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
অক্সফামের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ওষুধপ্রস্তুতকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে লাখ লাখ ডোজ়ের ভ্যাকসিন কেনার আগাম চুক্তি সেরে ফেলেছে ধনী দেশগুলো। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ওই পাঁচটি সংস্থা মোট ৫৯০ কোটি ডোজ়ের ভ্যাকসিন তৈরি করতে সক্ষম। এখন পর্যন্ত ৫৩০ কোটি ডোজ়ের সরবরাহ নিশ্চিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭০ কোটি ডোজ়ই (৫১ শতাংশ) আগাম কিনে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো, অস্ট্রেলিয়া, হংকং, ম্যাকাও, জাপান, সুইজারল্যান্ড ও ইসরায়েল। বাকি ২৬০ কোটি ডোজ়ের কিছু কিনেছে ভারত, চীনের মতো কিছু দেশ।
অক্সফামের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একটা জীবন বাঁচানো প্রতিষেধকপ্রাপ্তি আপনি কোন দেশে থাকেন, কিংবা কী পরিমাণ অর্থ রোজগার করেন, তার ওপর নির্ভর করা উচিত নয়।’ ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘দ্রুত, নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন তৈরি হওয়া জরুরি। কিন্তু ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো— এমন ভ্যাকসিন তৈরি করা, যা সবার কেনার সামর্থ্য থাকে এবং যা সবার কাছে পৌঁছায়।’
ভ্যাকসিন আবিষ্কার হলে তা ধনী দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণাধীন হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। তারা বারবারই সতর্ক করছে, শুধু ধনী দেশগুলো যদি ভ্যাকসিন পায়, তা হলে পৃথিবী করোনামুক্ত হবে না। সে ক্ষেত্রে বিপদ থেকেই যাবে।
বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা তিন কোটি ছাড়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার। করোনায় মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৯ লাখ। অনেকটাই ভালো হয়ে উঠেছিল ইউরোপের চিত্র। সংক্রমণের হার অনেকটাই কমে গিয়েছিল এই মহাদেশে। কিন্তু নতুন করে বাড়ছে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। এ নিয়ে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কড়াকড়ি নতুন করে বাড়ালেও কোয়রেন্টিনে থাকার দিন-সংখ্যা কমাচ্ছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ড। ইউরোপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দায়িত্বে থাকা হান্স ক্লুগ অবশ্য বলেছেন, বেশি পরীক্ষা হচ্ছে বলেই সংক্রমিতের সংখ্যা এতটা বেড়েছে।