বরিশাল প্রতিনিধি :- নগরীর রয়েল সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পটুয়াখালীর সদর উপজেলার কাকড়াবুনিয়া এলাকার কুমুদিনী বালা (৯৫) নামের এক বৃদ্ধা নারীর নাকের ভিতর থেকে জীবন্ত পোকা বের হওয়ার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বৃদ্ধা কুমুদিনি বালার পুত্র মন্টু হালদার জানান, বেশ কয়েক যাবত প্যারালাইসিসের কারনে তার মা কুমুদিনী বালার হাত-পা অবশ। গত শনিবার সকালে তার নাক থেকে হঠাৎ করে একটি জীবন্ত পোকা বের হতে দেখলে চিন্তায় পড়ে যাই। পরবর্তীতে পটুয়াখালীর একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে তাকে নিয়ে গেলে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেন। ওইদিনই বরিশাল নগরীর রয়েল সিটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে ইএনটি বিশেষজ্ঞ খান আব্দুর রউফের তত্ত¡াবধানে তার চিকিৎসা শুরু হয়। মন্টু হালদার আরও জানান, গত রবিবার চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ এক ধরনের যন্ত্র ব্যবহার করে তার মা (কুমুদিনি বালা) নাকের ভিতর থেকে জীবন্ত ৬০ টি পোকা বের করেছেন। একইভাবে সোমবার আরও ২০টি পোকা বের করা হয়েছে।
রয়েল সিটি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও ইএনটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ জানান, রোগটির নাম হচ্ছে ‘ম্যাগোট ইন দ্যা নোজ এন্ড প্যারানাজাল এয়ার সাইনাস’। নাক, চোখ ও কপালের অভ্যন্তরে একাংশে ফাঁকা জায়গা থাকে। কোনোভাবে পোকা সেখানে প্রবেশ করতে পারলে খালিস্থানে বাসা বাঁধে এবং ডিম পাড়ে। এরপর ওই ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়। কুমুদিনী বালার ক্ষেত্রে একই ঘটনা ঘটেছে। কারন তিনি বেশ কয়েক বছর ধেরে প্যারালাইসিসের কারণে দুই হাত নাড়াচাড়া করতে পারেন না। ধারণা করা হচ্ছে সেই সুযোগে ঘুমিয়ে থাকা বা অচেতন অবস্থায় পোকা তার নাক অথবা কান দিয়ে প্রবেশ করে খালি স্থানগুলোতে বাসা বেঁধেছে।
চিকিৎসক খান আব্দুর রউফ আরও জানান, বৃদ্ধার আগের তুলনায় কিছুটা ভালোর দিকে। তবে মাথার মধ্যে আরও পোকা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নাক ও ভেতরের অংশ আরও কয়েকবার ওয়াস করার প্রয়োজন হতে পারে। সব পোকা বের করা হলে সিটি স্ক্যান করে দেখা হবে। পরবর্তীতে পোকার বাসাটি নির্ণয় করার পর ওই বাসা ওষুধের মাধ্যমে ধ্বংস করা হবে। আশা করা যাচ্ছে সপ্তাহখানেক চিকিৎসার পর কুমুদিনী বালা এ রোগ থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে পারবেন।