অনলাইন ডেস্ক।। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে আরোপিত শর্তসমূহ কিছুটা শিথিল করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন থেকে করোনা টিকার ডাবল ডোজ নেয়া থাকলে ভারত থেকে ফেরার পর ১৪ দিন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের বদলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। অন্যদিকে, ভারত যাওয়ার ক্ষেত্রে লাগবে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র।
যাদের ডাবল ডোজ টিকা নেওয়া হয়নি তাদের ভারত থেকে ফিরে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন থাকতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হোম কোয়ারেন্টাইন সুবিধা নিতে যাত্রীদের সঙ্গে রাখতে হবে টিকার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের সনদ এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আরটিপিসিআর ল্যাব থেকে করোনা পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ সনদ।
চলমান করোনা মহামারি পরিস্থিতির অবনতি হলে গত ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার ভারত ভ্রমণে বিধিনিষেধ জারি করে। এতে বন্ধ হয় ভারতযাত্রা। তবে শর্ত সাপেক্ষে সীমিত পরিসরে সচল রাখা হয় মেডিকেল ভিসা। ভারতফেরত যাত্রীদের দেশে ফিরে ব্যক্তিগত খরচে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন চালু করা হয়।
এতে ব্যক্তিগত খরচে বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিয়ে বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। বিশেষ করে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে হাতে টাকা না থাকায় অনেকে সমস্যায় পড়েন।
নতুন নিয়ম চালু করার পর বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারত থেকে আসা যাত্রী আনারুল ইসলাম জানান, ভারতে যাওয়ার আগে তিনি টিকার ডাবল ডোজ গ্রহণ করেছিলেন। এখন ফিরে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার সুযোগ পেয়েছেন।
ভারত থেকে আসা আনিছুর রহমান বলেন, ‘আমি এক ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে ভারতে যাই। এখন ফিরছি। কিন্তু হোম কোয়ারেন্টাইনের সুবিধা পাচ্ছি না।’
অন্যদিকে ভারতগামী যাত্রী আশরাফ আলী জানান, ভারত যেতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র এনেছিলেন কিন্তু তা লাগেনি। ছাড়পত্র পেতে তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তিনি দুই ডোজ টিকা নিয়ে ভারতে যাচ্ছেন। এ নিয়মে এখন তারা অনেকটা স্বাচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারবেন।
এ বিষয়ে শার্শা উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মীর আলিফ রেজা জানান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পেয়ে তারা রোববার থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর করেছেন। ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে এখন আর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কোনো ছাড়পত্র লাগবে না। শুধু ভিসা, দুই ডোজ টিকা আর করোনা নেগেটিভ সনদ থাকলে তারা যেতে পারবেন।
তিনি আরও জানান, ভারত থেকে ফেরার সময় যাদের করোনা টিকার দুই ডোজ নেওয়া আছে তারা বাড়িতে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। তবে ফেরার আগে ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি লাগবে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, রোববার ভারত থেকে ফিরেছেন মেডিকেল ভিসার ৯০ জন যাত্রী। এদের মধ্যে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে ১১ জনকে এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে ৭৯ জনকে। ট্যুরিস্ট ভিসায় যাতায়াত এখনও বন্ধ রয়েছে।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে বন্দরে কাজ করছে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।