বিকেলে শেষ ম্যাচে নিউজল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামছে টাইগাররা
স্পোর্টস ডেস্ক।। আজ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এমনি করে হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে মরিয়া টাইগাররা।
টাইগারদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাত্তাই পায়নি সফরকারী নিউজিল্যান্ড। এমনকি এক ম্যাচ হাতে রেখে কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। ফলে সিরিজের শেষ ম্যাচটি নিয়ম রক্ষার হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুক্রবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ৪টায় পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে হোম অব ক্রিকেট মিরপুরের ২২ গজে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড। এ ম্যাচ জয় দিয়ে রাঙাতে চায় মাহমুদউল্লাহ বাহিনী।
যেহেতু সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তাই শেষ ম্যাচ জিতে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিতে মরিয়া লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে শুক্রবার পঞ্চম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে একাদশে টাইগারদের বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দেয়ার চিন্তাভাবনা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। সাকিবের আঙুলের পুরনো ব্যথা মাথাচাড়া দিয়েছে। তাই বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের বদলে সৌম্য সরকার এবং মোস্তাফিজের জায়গায় তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামকে খেলানো হবে। আরেক পেসার সাইফউদ্দিনকে বিশ্রাম দিয়ে তাসকিন আহমেদকে খেলানোর চিন্তা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
তাছাড়া নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা খুব একটা ভালো যায়নি সাকিবের। বল হাতে চার ম্যাচে ৪ উইকেট শিকারের পাশাপাশি রান করেছেন মাত্র ৪৫। এমনকি নিউজিল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে অনন্য এক রেকর্ডের সামনে ছিলেন টাইগার অলরাউন্ডার। ২ উইকেট নিতে পারলেই লাসিথ মালিঙ্গাকে সরিয়ে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে শীর্ষ উইকেটশিকারি হবেন সাকিব। কিন্তু শুক্রবার পঞ্চম ও শেষ ম্যাচ না খেলায় এ রেকর্ডের জন্য তাকে অপেক্ষা করতে হবে বিশ্বকাপ পর্যন্ত। এদিকে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) বাকি অংশ। করোনা ভাইরাসের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায় আইপিএল। পরে বাকি অংশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। এবারের আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলছেন সাকিব। এ টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দু-একদিনের মধ্যে দেশ ছাড়ার কথা সাকিবের।
এদিকে সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের ছক কষছে মাহমুদউল্লাহ বাহিনী। তবে টাইগারদেরও ছাড় দিতে নারাজ কিউইরা। এ ম্যাচ জিতে দেশে ফিরতে চায় টম লাথাম বাহিনী। বাংলাদেশ সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে এসে হোম অব ক্রিকেট মিরপুরের উইকেট নিয়ে অনেক গবেষণা করেছে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ব্যাট হাতে টাইগার বোলারদের সামনে পাত্তাই পাননি কিউই ব্যাটসম্যানরা। এমনকি নিউজিল্যান্ডকে সর্বনিম্ন রানের রেকর্ড উপহার দেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। প্রথম ম্যাচে ৬০ রানে গুটিয়ে যায় টম লাথামরা। জবাবে ৭ উইকেটে জেতে বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে দুর্দান্ত লড়াই করে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছিল সফরকারীরা। কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ওইদিন টান টান উত্তেজনায় ঠাসা একটি ম্যাচ উপভোগ করেছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তুলে স্বাগতিকরা।
জবাবে ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৩৭ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। ফলে রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৪ রানে জিতে বাংলাদেশ। তবে তৃতীয় ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে খেই হারায় টাইগাররা। ওইদিন নিউজিল্যান্ডের দুই বাঁহাতি স্পিনার এজাজ প্যাটেল ও রাচিন রবীন্দ্রর ঘূর্ণিতে হোঁচট খান বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিউইদের দেয়া ১২৮ রানের জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান তুলতে সক্ষম হয় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফলে তৃতীয় ম্যাচ ৫২ রানে হেরে যায় টাইগাররা। তাছাড়া এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে একটি মাইলফলক স্পর্শ করেছেন টাইগার অধিনায়ক। বাংলাদেশের প্রথম ও বিশে^র অষ্টম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০তম ম্যাচ খেলেন মাহমুদউল্লাহ।
এরপর চতুর্থ ম্যাচে বাংলাদেশ সিরিজ জিতবে নাকি অপেক্ষা বাড়বে, তা নিয়ে ভাবনায় ডুবে ছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। তবে যা-ই হোক নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ম্যাচে হেসেখেলে সিরিজ জেতে বাংলাদেশ। এ ম্যাচে নাসুম-মোস্তাফিজের বোলিং তোপের সামনে কোমর সোজা করে দাঁড়াতেই পারেনি টম লাথাম বাহিনী। নির্ধারিত ২০ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৯৩ রান তুলতে সক্ষম হয় কিউইরা। এত মামুলি রানের জবাবে ৬ উইকেটে জিতে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাহিনী।
ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। তবে কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার ইতিহাস থাকলেও টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল এই প্রথম। এ জয়ে প্রথমবার টানা তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলেন মাহমুদউল্লাহরা। সব মিলিয়ে এ ফরম্যাটে বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সংখ্যা দাঁড়াল ৯-এ। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো কুড়ি ওভারের সিরিজ জয়ের পর কোনো উল্লাস করতে দেখা যায়নি টাইগারদের ড্রেসিং রুমে। এমনকি চতুর্থ ম্যাচে অপরাজিত থাকা দুই ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ এবং আফিফও জয়ের উচ্ছ্বাসে গা ভাসিয়ে দেননি।