অনলাইন ডেস্ক।। মৌসুমী বায়ু বিদায়ের মুহূর্তে পশ্চিম ও পূর্বাকাশের শীতল ও গরম বাতাসের সংঘর্ষের কারণে সারাদেশে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। যা আরও কয়েকদিন থাকবে। ২০-২১ অক্টোবরের পর সারাদেশেই পশ্চিমাকাশের শীতল বাতাস প্রবাহ শুরু হলে ভ্যাপসা গরম ভাব কেটেছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক সংবাদকে বলেন, ‘এ সময় অন্যান্য বছরের মত স্বাভাবিক তাপমাত্রা বিরাজ করছে। তবে সাগরে লঘুচাপের কারণে গরম ভাবটা বেশি হচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে ৫টি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। অক্টোবর মাসে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। মৌসুমি বায়ু বিদায়ের আগে বাতাসেও আর্দ্রতা থাকে তুলনামূলক বেশি।’ তবে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে ঠান্ডাভাব চলে আসবে বলে জানান তিনি।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বুধবার ১৩ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ ও সিলেটে দেশের সর্বোচ্চ ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অধিকাংশ এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। আগের দিন সিলেটে থার্মোমিটারের পারদ উঠেছিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে।
আবহাওয়াবিদ মো. আরিফ হোসেন বলেন, “দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশের বাকি এলাকায় থেকে বিদায়ের অবস্থায় রয়েছে। মৌসুমি বায়ু দেশের উপর কম সক্রিয়, উত্তর বঙ্গোপসাগরেও দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। দুয়েক দিনের মধ্যে একটা লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এমন আবহাওয়ায় ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। লঘুচাপ সৃষ্টি হলে দু’য়েক দিনের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়বে। তাতে ভ্যাপসা গরম কেটে যাবে। দুই দিনের মধ্যে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিদায় নেবে। লঘুচাপের বৃষ্টি শেষে চলে আসবে শীতালু আবহাওয়া।”
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে- ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের দু’য়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, চলতি অক্টোবর মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। গত মাসে তিনটি লঘুচাপ (৬, ১০ ও ২১ সেপ্টেম্বর) সৃষ্টি হয় বঙ্গোপসাগরে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ এর রূপ নিয়ে ভারতের অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূল অতিক্রম করে। বাংলাদেশে সেই ঝড়ের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি।