বিশেষ প্রতিনিধি।। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) কাউন্সিলরসহ জোড়া খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই আসামি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) ও থানা পুলিশের সঙ্গে ‘বন্ধুকযুদ্ধে’ তারা নিহত হন।
নিহতরা হলেন- মামলার তিন নম্বর আসামি নগরীর সুজানগর এলাকার বাসিন্দা রফিক মিয়ার ছেলে মো.সাব্বির হোসেন (২৮) ও মামলার পাঁচ নম্বর আসামি সংরাইশ এলাকার কাকন মিয়ার ছেলে সাজন (৩২)। নিহতদের মরদেহ বর্তমানে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে।
সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিষয়টি জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সত্যজিৎ বড়ুয়া।
তিনি বলেন, ‘সোমবার রাত সোয়া ১২টায় খবর পাই আলোচিত এই জোড়া খুনের মামলার এজহারনামীয় আসামিসহ অজ্ঞাতনামা আসামিরা সংরাইশ ও নবগ্রাম এলাকায় অবস্থান করছে। খবর পেয়ে কোতয়ালি মডেল থানা এবং ডিবি পুলিশের একাধিক টিম আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। রাত প্রায় ১টার দিকে সদর উপজেলার গোমতী নদীর বেড়িবাঁধের সংরাইশ বালুমহল সংলগ্ন এলাকায় ডিবি ও থানা পুলিশের টিম পৌঁছালে আসামিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে।’
এ সময় উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে কয়েকজন দুষ্কৃতিকারী পালিয়ে যায়। গুলিবর্ষণ শেষে ঘটনাস্থলে ওই দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে তাদেরকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিক্যল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে পুলিশের তিনজন সদস্য আহত হয়। আহত পুলিশ সদস্যদের উন্নত চিকিৎসার জন্য পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
সত্যজিৎ বড়ুয়া জানান, ঘটনাস্থল থেকে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি ৭.৬৫ পিস্তল, একটি পাইপ গান, পিস্তলের অব্যবহৃত গুলি, গুলির খোসা এবং কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ২২ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে নগরীর পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে কাউন্সিলর কার্যালয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন কুসিক ১৭নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে (৫৫)। কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরো পাঁচজন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জোড়া খুনের ঘটনায় গত ২৩ নভেম্বর রাতে কাউন্সিলর সোহেলের ছোট ভাই সৈয়দ মো. রুমন বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।