*৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে রক্ষা
*সাংসদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
বরিশাল অফিস :- সংসদ সদস্য প্রজেক্ট করবেন, তাই হিন্দু সম্প্রদায়ের রতন ঘরামী নামের এক ব্যক্তির পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দলিলে সই নিতে তাকে (রতন) আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ৯৯৯ নাম্বারে কল করলে গভীর রাতে পুলিশ রতন ঘরামীকে উদ্ধার করে সাংসদের লোক তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খানকে আটক করলেও পরে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় থাকা রতন ঘরামী বানারীপাড়া থেকে পালিয়ে বরিশাল প্রেসক্লাবে মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। রতন ঘরামী শুধু একাই নয়; সাংসদের কাছে অনিচ্ছাসত্তে¡ও জমি বিক্রি করতে হবে এমন ১২টি পরিবারের সদস্যরা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বানারীপাড়া উপজেলার উদয়কাঠি ইউনিয়নের পশ্চিত তেঁতলা গ্রামের বাসিন্দা রতন ঘরামী বলেন, বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলমের ম্যানেজার আল-আমিন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ইব্রাহীম, তুহিন গাজী এবং ইলিয়াস খান গত ২৪ জানুয়ারী রাত ১১ টার দিকে তাকে বাড়িতে আটক করে রাখেন। তাদের দাবী ১৫ কাঠা জমি সাংসদ শাহে আলমের নামে লিখে দিতে হবে। এমন ঘটনা শুনে তার (রতন) স্বজনরা ৯৯৯ নাম্বারে কল করলে রাত ২ টা ২০ মিনিটের দিকে পুলিশ গিয়ে তাকে (রতন ঘরামী) উদ্ধার এবং সাংসদের লোক তুহিন গাজী ও ইলিয়াস খানকে আটক করলেও পরে সাংসদের চাঁপের মুখে পুলিশ তাদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। এরপর তিনি জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় থাকায় পালিয়ে বরিশালে এসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
রতন ঘরামী আরও বলেন, আমি কেবল একা নয়; আমার মতো আরো ১২টি পরিবারের জমি সংসদ সদস্য প্রজেক্ট করবেন বলে তার নামে লিখে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। রতন ঘরামী, সাংসদের রোষানল থেকে রেহাই পেতে এবং জীবনের নিরাপত্তার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
রতন ঘরামী আরও বলেন, এ ঘটনার ১৫ দিন আগে এমপি শাহে আলম আমাকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে বলেন, তোর জায়গায় আমি একটি প্রজেক্ট করবো। তোর জমি আমাকে লিখে দে। সাংসদ আরও বলেন, কিছু টাকা নিয়ে যা। তখন আমি বলেছি, জমি আমি বিক্রি করবো না। এরপর থেকেই সাংসদের লোকজন আমাকে হুমকি দিয়ে বলেন, এমপিকে জমি লিখে না দিলে প্রানে শেষ করে দেয়া হবে। পরিবারের সদস্যরা লাশও খুঁজে পাবেনা।
সংবাদ সম্মেলনের সকল অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন দাবি করে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য শাহে আলম বলেন, তেঁতলা গ্রামে সরকারী প্রকল্পের একটি মুরগীর খামার করবো। এজন্য কিছু জমি আমি ক্রয় করেছি। আরো কিছু জমি লাগবে। আমি রতনের জমি ক্রয় করতে চাইনি। বরং সে আমার কাছে জমি বিক্রি করতে এসেছিল কিন্তু তার জমির কাগজপত্রে সমস্যা থাকায় আমি আমার লোকদের জানিয়েছি, রতনের জমি ক্রয়ের কোন দরকার নেই। কাউকে জিম্মি করার প্রশ্নই ওঠেনা।
এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম সালেহ মঞ্জু মোল্লা বলেন, ব্যক্তির দায় কখনোই আওয়ামী লীগ নিবে না। এমপি যা করছেন তা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। বানারীপাড়া থানার ওসি হেলাল উদ্দিন বলেন, ৯৯৯ নাম্বারের কল পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল। সেখানে জমি বিক্রির বিষয় নিয়ে ঝামেলা ছিলো। যারা কল করেছিল তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। তবে সাংসদ কারো জমি লিখে নেওয়ার জন্য চাঁপ সৃষ্টি করছে এমন কোন ঘটনার লিখিত অভিযোগ আমরা পাইনি।