ধামাচাঁপা দিতে মরিয়া
বরিশাল অফিস :- কৃষকদের জন্য সরকারের ভর্তুকির সার কালোবাজারে বিক্রির অভিযোগে গত কয়েকদিন থেকে জেলার গৌরনদী উপজেলার টরকী বন্দরে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।
বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে সাংবাদিক ম্যানেজের নামে গোপন বৈঠক থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন বিসিআইসির অভিযুক্ত টরকী বন্দরের সারের ডিলার শিশির কুন্ডু। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গৌরনদীর সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিসিআইসির সারের ডিলার রয়েছেন ১০ জন। তারা নির্ধারিত ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দ ভর্তুকির সার চলতি বোরো মৌসুমে অধিক মুনাফার জন্য কালোবাজারে অন্য জেলায় বিক্রি করছেন।
টরকী বন্দরের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, সারের ডিলার শিশির কুন্ডুর গুদাম থেকে কালোবাজারে বিক্রির জন্য টরকী বন্দর ট্রলারঘাট থেকে প্রায়ই ভর্তুকির সার পাশের মাদারীপুর জেলার কালকিনি, বাবুগঞ্জ ও মুলাদী উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হয়। ফলে গৌরনদীর কৃষকদের খুচরা দোকান থেকে অতিরিক্ত দামে সরকারী ভর্তুকির সার ক্রয় করতে হচ্ছে।
সূত্রমতে, গত ৪ ফেব্রæয়ারী শিশির কুন্ডুর গোডাউন থেকে বিক্রি করা প্রায় অর্ধশত বস্তা সার কালকিনি ও মুলাদী উপজেলায় ট্রলারযোগে পাচারের সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীরা পুরো বিষয়টি ক্যামেরা বন্দি করেন। এরপর থেকেই স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল শিশির কুন্ডুর পক্ষালম্বন করে পুরো বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। এনিয়ে সাংবাদিক ম্যানেজের নামে গোপন বৈঠক থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকার মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছেন অভিযুক্ত টরকী বন্দরের সারের ডিলার শিশির কুন্ডু। এমনকি ইতোমধ্যে বিভিন্নস্থানে মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
তবে কালোবাজারে সার বিক্রি ও টাকা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত সারের ডিলার শিশির কুন্ডু বলেন, কয়েকজন চাষী সার ক্রয় করে ট্রলারযোগে নেওয়ার সময় একটি মহল কালোবাজারে সার বিক্রির মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে সুনামের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছি, সেখানে আমার ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য একটি মহল সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যে তথ্য প্রদান করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গৌরনদীর অধিকাংশ খুচরা সার বিক্রেতাদের নেই কোন সরকারী অনুমোদন। যাদের ২/১ জনের রয়েছে তাও অধিকাংশর মেয়াদউর্ত্তীণ। ফলে প্রায় প্রতিটি হাট-বাজার ও বাসষ্ট্যান্ডে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে ওঠা খুচরা সার বিক্রেতারা প্রান্তিক চাষীদের কাছে অতিরিক্তমূল্যে সার বিক্রি করছেন। ফলে সরকারের ভর্তুকি সারের উদ্যোগ থেকে বঞ্ছিত হচ্ছেন চাষীরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মামুনুর রহমান বলেন, বরাদ্দ সার নির্ধারিত ইউনিয়নেই বিক্রি করতে হবে। অন্য উপজেলা ও ইউনিয়নে বিক্রি করা যাবেনা। ডিলার শিশির কুন্ডুর বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে সার মনিটরিং কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে নিয়ে তার (শিশির) গোডাউন পরিদর্শন করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।