Close Menu
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • রাজধানী
  • সারাদেশ
  • আর্ন্তজাতিক
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • অন্যান্য
    • ফিচার
    • আইন আদালত
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • শিক্ষা
    • স্বাস্থ্য
    • সাহিত্য
    • অর্থনীতি
    • কৃষি
    • ধর্ম
    • বিজ্ঞাপন
    • সাক্ষাৎকার
    • প্রবাস
    • রেসিপি
  • রাঙা প্রভাত পরিবারবর্গ
Facebook X (Twitter) Instagram
শিরোনামঃ
  • বাবুগঞ্জের জাহাঙ্গীর নগরে ভূমি সেবা সহায়তা কেন্দ্র উদ্বোধন
  • মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাস-ট্রাক সংঘর্ষ, নিহত ৪
  • পাবনায় পানিতে ডুবে ভাই-বোনের মৃত্যু
  • সাংবাদিক ফোরামের নতুন কমিটি গঠন
  • পূর্ব হোসনাবাদ কলেজের অধ্যক্ষের অবসরজনিত বিদায়ী সংবর্ধনা
  • বাবুগঞ্জে বীরপ্রতীক রতন শরীফ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু
  • বাবুগঞ্জে উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংঘের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উৎসব উদযাপন
  • ঈদুল আযহার শুভেচ্ছা জানালেন ডাঃ শামিম
  • বাবুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি আক্তার হোসেন খোকা’র উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • বাবুগঞ্জের জাহাঙ্গীর নগরে চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করলো ইউএনও ফারুক আহমেদ
দৈনিক রাঙা প্রভাত, www.dailyranggaprovat.comদৈনিক রাঙা প্রভাত, www.dailyranggaprovat.com
শনিবার, জুলাই ৫, ২০২৫
  • প্রচ্ছদ
  • জাতীয়
  • রাজনীতি
  • রাজধানী
  • সারাদেশ
  • আর্ন্তজাতিক
  • বিনোদন
  • খেলাধুলা
  • অন্যান্য
    • ফিচার
    • আইন আদালত
    • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
    • লাইফস্টাইল
    • শিক্ষা
    • স্বাস্থ্য
    • সাহিত্য
    • অর্থনীতি
    • কৃষি
    • ধর্ম
    • বিজ্ঞাপন
    • সাক্ষাৎকার
    • প্রবাস
    • রেসিপি
  • রাঙা প্রভাত পরিবারবর্গ
দৈনিক রাঙা প্রভাত, www.dailyranggaprovat.comদৈনিক রাঙা প্রভাত, www.dailyranggaprovat.com
Home»সাহিত্য»মোঃ কামরুল ইসলাম এর ছোটগল্প
সাহিত্য আগস্ট ২, ২০২২Updated:আগস্ট ২, ২০২২9 Mins Read234 Views

মোঃ কামরুল ইসলাম এর ছোটগল্প

Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email
Print Friendly, PDF & Email

মধ্যবিত্ত
মো. কামরুল ইসলাম

মেঘ হটিয়ে সূর্য উকি মেরেছে আকাশে। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই চলে। স্ত্রীর নিষেধ উপেক্ষা করে ঘর থেকে তাই ছাতা ছাড়াই বের হলেন। ছাতা একটা আছে যেটা দেখলেই বোঝা যায় যে এর বয়স হয়েছে। বিভিন্ন্ জায়গা থেকে আকাশ দেখা যায়। দেখলে মানুষ কী বলবে! মাস্টার মানুষ ইচ্ছে করলেই সব কাজ করতে পারে না।

সদরে যেতে ঘণ্টাখানেক সময় লাগে। হেটেই রওয়ানা দিয়েছেন। তিনি অবশ্য আজ সখের বশে হাটছেন না। পকেটের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে হাটাটাই শ্রেয় বলে মনে হয়েছে।

-সার, গাড়িতে আহেন।

মজনু মিয়ার প্রস্তাবটা তিনি সচেতনভাবেই প্রত্যাখ্যান করলেন। গাড়িতে উঠলে হয়ত মজনুর ভাড়াটাও নিজের পকেট থেকে যাবে তাই হাটাটাই নিরাপদ। নিজ মনে হেটে চলেছেন। হঠাৎ আকাশ নিকষ কালো মেঘে ঢাকা পড়ে গেল। মুহুর্তে শুরু হল বৃষ্টির আক্রমণ।আশে পাশে আশ্রয় নেবার মতো কোনো বাড়ি ঘরও নেই। মধ্যবিত্তের সাথে মনে হয় প্রকৃতির খেলাটা জমে ভাল! তাই অনেকটা অসহায়ভাবেই নিজেকে প্রকৃতির হাতে সোপর্দ করলেন। মিনিট পাঁচেক পরে বৃষ্টি থেমে গেল। কিন্তু তাতে কী! ততক্ষণে তিনি ভিজে একাকার।গায়ের শার্টটি খুলে নিংড়ে নিয়ে মাথা ও শরীর মুছে শার্টটি আবার গায়ে জড়ালেন। তারপর আবার হাটা শুরু করেছেন।সদরে পৌছাতে পৌছাতে তার জামা মোটামুটি শুকিয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যিস চেকটি ভেজে নি। আগে থেকেই চেকটি এক টুকরো পলিথিনে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। তাই রক্ষা। আবহাওয়া খারাপ বলে হয়ত ব্যাংকে তেমন ভিড় ছিল না।

-আরে, মাস্টার সাহেব যে! আসেন আসেন।

ক্যাশ অফিসার দেখেই চিনে ফেললেন। কারণ ইদানিং প্রত্যেক মাসেই তিনি ব্যাংকে আসেন। একটা সময় ছিল যখন তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে আসতেন। সেটা এক বছর আগের কথা। কিন্তু এখন আর তার সে সামর্থ্য নেই। এখন টাকা তোলাই তার ব্যাংকে আসার মূল উদ্দেশ্য। বিগত এক বছর যাবৎ তিনি একাজই করে আসছেন। জমানো টাকা উঠিয়ে উঠিয়ে খরচ করছেন।

-তা মাস্টার সাহেব সব টাকাতো উঠিয়েই ফেললেন। এখন দুই হাজার টাকা উঠালে আপনার অ্যাকাউন্টে আর উত্তোলনযোগ্য ব্যালেন্স থাকবে না।

-সে কথা আমি জানি।

বলতে গিয়ে কন্ঠ ধরে আসছিল তার। ব্যাংক থেকে বেড় হয়ে একটু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখতে ইচ্ছে করল। হঠাৎ খেয়াল করলেন সেখান থেকে “আলোর শতদল মাধ্যমিক বিদ্যালয়” এর চার তলা বিল্ডিংটি দেখা যায়। আজ স্কুলটাকে দেখতে বড় মন চাইছে তার। ব্যাংক থেকে কয়েক মিনিট উত্তর দিকে হাটলেই রাস্তার সাথেই হলুদ রঙ করা চার তলা ভবণ। প্রাইভেট স্কুল হলেও স্কুলটি ছিল নামকরা। রেজাল্ট ছিল খুবই ভাল। আর এই ভাল রেজাল্টের নেপথ্যের কারিগরদের অন্যতম তালুকদার স্যার। তিনি এলাকার বিখ্যাত ইংরেজি শিক্ষক। আশে পাশের দুই চার গ্রামে তার ব্যাপক সুনাম। করোনা মহামারির কারণে স্কুলটি অর্থ সঙ্কটে পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ শিক্ষকদের বেতন দিতে পারছে না। তাই উপায় অন্ত না দেখে স্কুলটি বন্ধ করতে হয়েছে। গেটের সামনে দাড়িয়ে তালুকদার সাহেব দু চোখের জল ছেড়ে দিলেন। সময়ের খেলার কোনো প্রেডিকশন হয় না। আজ থেকে এক বছর আগেও তালুকদার স্যার যা কল্পণা করতে পারেন নি আজ তিনি সেই রূঢ় বাস্তবতার সামনে দাড়িয়ে। অদৃষ্ট যে কখন কাকে কোথায় নিয়ে দাড় করায় তা কেউ বলতে পারে না। আজ তালুকদার স্যারের চোখের জল যতটা না আবেগের ততটাই অভাবের।আবেগ আর অভাবের দ্ব›েদ্ব আবেগের হার অনিবার্য। মহামারি করোনা অভাবের যে নিষ্ঠুর জাল ছড়িয়েছে তাতে তালুকদার স্যার আঠার মতো আটকে গেছেন। শেষ সঞ্চয়টুকুও আজ ব্যাংক থেকে নিয়ে এসেছেন। কিচ্ছু করার নেই তার। কারণ তিনি যে মধ্যবিত্ত!

দীর্ঘদিন স্কুল কলেজ বন্ধ।এক সময় ব্যাচে প্রাইভেট টিউশন করাতেন। বেশির ভাগ ছাত্রই ছিল দরিদ্র পরিবারের। বেতনের টাকা দিতে পারত না। আবার অনেকে দিতও না। আর তিনি চাইতেনও না। টাকার খুব একটা দরকারও ছিল না। স্কুল থেকে প্রাপ্ত বেতন আর টিউশন থেকে যা আয় হত তাতে সংসারের খরচ উঠে ব্যাংকেও কিছু রাখতে পারতেন। কিন্তু করোনা আসার পর স্কুল বন্ধ হয়ে যায় আর ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যাও দিন দিন কমতে থাকে। বাধ্য হয়ে এক সময় টিউশন বাদ দিয়ে দেন। বাড়ি গিয়ে কয়েকজনকে পড়াতেন। কিন্তু অটোপাশের আশায় সকলেই পড়াশুনা থেকে হাত গুটিয়ে নিয়েছে। ইনকাম সোর্স সব ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেছে। কাজের অভাব নেই চারদিকে- ভ্যান চালানো, রিকশা চালানো, দিন মজুরের কাজ, গাছ কাটা আরও কত কাজ। কিন্তু তিনি যে একটাও করতে পারছেন না। কারণ তিনি যে মাস্টার! মাস্টার মানুষকে সব কাজে মানায় না!
তালুকদার সাহেবের সংসার তেমন বড় নয়। এক ছেলে এক মেয়ে এবং আর তারা দুই জন। চারজনের ছোট সংসার। মাপা সংসারের মাপা খরচ। এক সময় স্বচ্ছন্দে খরচ নির্বাহ করতে পারলেও এখন হাপিয়ে উঠছেন। খরচের সীমানাটাকে নিয়মিত সঙ্কুচিত করেই চলেছেন। সঙ্কুচিত করতে করতে এখন এমন একটা পর্যায়ে এসে পৌছেছে এখানে আর কাট ছাট করার সুযোগ নেই। আগে তিনি নিজে তিন বেলা ভাত খেতেন এখন খান এক বেলা। সকালে আর রাতে চিড়া খান। স্ত্রীকে বলেছেন যে ডাক্তার তাকে চিড়া খেতে বলেছে। সত্য মিথ্যা পরের কথা। সপ্তাহে দুই এক দিন মাছ কেনেন। আগে যেখানে বাজারে সকাল সকাল যেতেন তাজা মাছ পাবার আশায় এখন হাটে যান বিকেল বেলা পঁচা মাছ সস্তায় কেনার আশায়। মাছের উপর ভন ভন করে মাছি উড়তে দেখলেই সেখানে মাছওয়ালাকে আক্রমণ করেন-

আরে মিয়া, তোমার মাছ তো পইচা গেছে। এত বেশি চাও ক্যান? দুই খান পাইবা না একখান পাইবা। দিবা?

শেষ বিকেল। তাই উপায় অন্ত না দেখে মাছওয়ালা দুইশ টাকার মাছ একশ টাকায় দিয়ে শেষ সময়ের ঝামেলা দূর করে। দুটো ঈদ গেল স্ত্রী সন্তানদের কিছু দিতে পারেন নি। ছেলেমেয়েদের জামাকাপড়ের দিকে চোখ দেওয়া যায় না। ওদের কি ভাল-মন্দ খেতে ইচ্ছে করে না? বাবা হয়ে তিনি ওদের জন্য কিছুই করতে পারছেন না। এর চেয়ে অসহায়ত্ব মনে হয় আর দ্বিতীয়টি নেই। মনে চায় রেল লাইনে মাথা দিয়ে ভবলীলা সাঙ্গ করতে। এমন জীবন যেন কারও না হয়। মনের কষ্ট বোঝার কেউ নেই। নীরবে নিভৃতে অশ্রæ বিসর্জন ছাড়া আর কিছুই করতে পারেন না। নিজের কষ্ট স্ত্রীকেও বুঝতে দেন না। পতিপ্রাণা স্ত্রীও সব কিছু বুঝে স্বামীর ওপর কখনো চাপ প্রয়োগ করেন না। তিনিও পরিস্থিতি খুব ভালভাবে আঁচ করতে পারছেন।

সবাই মনে করে মাস্টার সাহেব তো ভালই আছেন। চাকরি না থাকলেও ব্যাংকের ভল্ট মাস্টারের টাকায় ভর্তি! বাস্তবতা কোথায় আর মানুষের চিন্তাধারা কোথায়। জীবনে কখনো ধার করেন নি। নিজের অসুবিধা মানুষের কাছে গোপণ করতে অভ্যস্ত তিনি। নিজের মধ্যে একটা মধ্যবিত্তধর্মী আত্মসম্মানবোধ সক্রিয়ভাবে ক্রিয়াশীল।যে আত্মসম্মানবোধের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে তিনি ত্রাণের লাইনে দাড়াতে পারেন না; না পারেন মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে; না পারেন দিনমজুরের কাজ করতে; আর না পারেন পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে। এরমধ্যে একবার গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়-

করোনা উপলক্ষে সরকার যা দেয় সেটা ত্রাণ নয় সহযোগিতা। সরকারি সহযোগিতা গ্রহণ করা অসম্মানের নয় বরং এটা অধিকার।

কিন্তু মাস্টার সাহেব এই অধিকার কোনোভাবেই আদায় করতে পারছেন না। মধ্যবিত্ত তকমাটা মাস্টারের জীবনে একটা অভিশাপ হয়ে দাড়িয়েছে। মাঝে মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদে যান। ঘুরে ঘুরে ত্রাণের লাইন দেখেন। নিজে গিয়ে লাইনে দাড়াবার কথা স্বপ্নেও ভাবতে পারেন না।আবার বাড়িতে ফিরে আসেন। দুশ্চিন্তায় মাথা ভোঁ ভোঁ করছে। হঠাৎ চেয়ারম্যান বাড়ি থেকে খবর আসে। চেয়ারম্যান নাকি মাস্টার সাহেবকে যেতে বলেছেন। বড় আশা নিয়ে তিনি চেয়ারম্যান বাড়িতে গেলেন। ভাবলেন যে এইবার বুঝি ত্রাণ সিস্টেমে ঢুকতে পারবেন। ঠোটের কোনে একটা দুষ্প্রাপ্য হাসির রেখা জেগে ওঠে। চেয়ারম্যান বাড়ি কাছেই। বুক ভরা আশা নিয়ে চেয়ারম্যানের দরবারে হাজির হন।

-আরে, মাস্টার যে! আসো; বুঝলা মাস্টার সরকার কইছে একটা ত্রাণ কমিটি করতে। সৎ, গ্রহণযোগ্য এবং ক্লিন ইমেজের লোক লাগব। তোমার নাম আমি কমিটিতে দিছি। তুমি অন্যান্য সবার লগে বইয়া পঞ্চাশজনের একটা লিস্টি করবা।

কমিটিতে যারা আছে সকলেই দলীয় লোক। মাস্টার বুঝতে পারলেন কমিটিকে একটা গ্রহণযোগ্য রূপদানের জন্য তার নাম এখানে যুক্ত করা হয়েছে। পঞ্চাশ জনের মধ্যে মাস্টার নিজের নামটা অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তায় আছেন। সবার পরামর্শ অনুযায়ী নাম লেখা হচ্ছে। কিন্তু মাস্টারের নামটা কেউই বলছে না। নিজেও নিজের নামটা প্রস্তাব করতে পারছেন না।

-স্যার, আপনার নাম লেহেন।

মিজান মোল্লা বলল। স্যার একটু অবাক হলেন। ভাবলেন মোল্লার চেয়ে আপন মনে হয় মাস্টারের আর কেউ নেই! জবাবে স্যার কি বলবেন বুঝতে পারছেন না। বুঝলেন যে তার আত্মসম্মান প্রতিবাদ করছে।

-নাহ, আমার নাম লেখা লাগবে না।

-হয়, হ্যার নাম এই লিস্টিতে মানায়? হে মাস্টার মানুষ!

নিজের নামটা লেখার যে একটা সম্ভাবণা জেগে উঠেছিল তা নিমিষেই উবে গেল। মাস্টার মনে মনে কষ্ট পেলেন। নিজের উপর রাগ হচ্ছে খুব। একবুক হতাশা নিয়ে চেয়ারম্যান বাড়ি ত্যাগ করলেন।

একদিন সকালবেলা শুনলেন পাশের বাড়ির মোতালেবের ঘরের সামনে কারা যেন এক বস্তা চাল রেখে গেছে। এরকম আরও কিছু নমুনা পাওয়া গেল। অনেকের ঘরের সামনেই নাকি গায়েবী সাহায্যের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কিন্তু মাস্টারের ঘরের সামনে কিছু পাওয়া যায় না। বুঝতে পারলেন তিনি যে মধ্যবিত্ত এ কথা কারো অজানা নয়। আর এ কারণেই তিনি সাহায্য লাভের অযোগ্য। আসলে মধ্যবিত্তের কোনো বিত্ত নেই। মধ্যবিত্ত অর্থ হওয়া উচিত বিত্তহীন। কারণ মধ্যবিত্তের না আছে অর্থ, না আছে সম্পদ, না আছে ক্ষমতা। তবে মধ্যবিত্তের একটা জিনিস আছে- আত্মসম্মান। এই আত্মসম্মানই আজ মাস্টার সাহেবের জীবনে অস্তিত্বের লড়াইয়ের পথে প্রধান অন্তরায়।

পকেটের টাকা ফুরিয়ে যাবার উপক্রম। হয়ত আর দিন দুয়েক চলতে পারে। দুশ্চিন্তায় চোখে সরষে ফুল দেখছেন। শূন্য পকেটের যন্ত্রনা যে কতটা অসহ্য তা ভুক্তভোগী ছাড়া কারও বোঝার সাধ্য নেই। সারারাত ভাবলেন কী করবেন। অন্তহীন ভাবনার শেষে সমাধানসূত্রও খুঁজে বের করলেন। তিনি বিসর্জন দিবেন। জীবনের সবচেয়ে দামী সম্পদ বিসর্জন দিবেন। আত্মসম্মান কোরবানি করবেন।

সকাল হতে না হতেই শহরে চলে গেলেন। এখানে কেউ দেখার সম্ভাবনা নেই। সারা দিনের পরিশ্রম শেষে সন্ধ্যার পরে বাড়ি ফিরে এলেন। দিনভর যা উপার্জন করেছেন তা দিয়ে মোটামুটি ভালই বাজার করেছেন। স্ত্রীকেও বলেন নি কোথায় গিয়েছিলেন।

-টাকা কোথায় পেলে?

-সে কথা তোমার জাইনা কাজ নাই। রান্না বান্না কর। ছেলেদের খাওয়াও। কতদিন ওরা ভাল মন্দ খায় না!
স্বামীর কাজে নাক গলানোর অভ্যাস নেই বলে তিনি মাস্টারকে অহেতুক জ্বালাতন করলেন না। স্বামীর আজ্ঞা পালন করলেন।

পরের দিন সকাল হতে না হতেই মাস্টার আবার উধাও। আজও আবার শহরে। তবে এবার অন্য লাইনে যাবেন। বরিশাল টু ঝালকাঠী। বাসে ওঠার কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির পাশের একভদ্র লোকের সাথে দেখা।

-স্যার, আপনি? কী করছেন এসব?

-কে স্যার? আমি কোনো সার টার না। আমি আপনাকে চিনি না।

হেল্পারকে বলে সাথে সাথে বাস থেকে নেমে গেলেন। যে ভয়টা পেয়েছেন সেটাই গেল! হায় হায়! হায় রে কপাল! যেখানটিতে বাঘের ভয় সেখানটিতে সন্ধ্যা হয়! যে ভয়ে এত দূর এসেছেন সেটাই হয়ে গেল! সবশেষ! কী করবেন এখন? ও তো বাড়ি গিয়ে সবাইকে বলে দেবে! মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ল। দুচোখ বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রæ বইতে লাগলো। এর চেয়ে শক্ত চাপ আর হতে পারে না। এত দিনের অর্জন সব নিমিষেই শেষ হয়ে গেল। বাড়ি গিয়ে মুখ দেখাবেন কী করে! সত্যি সত্যিই তো তিনি জীবনের সবচেয়ে দামি সম্পদ বিসর্জন দিয়েছেন। মুখ দেখানোর আর কোনো রাস্তা অবশিষ্ট নেই। বেঁচে থাকার সাধ মিটে গেছে।

তালুকদার আবদুর রাজ্জাক স্যার মারা গেছেন বহু দিন হয়ে গেছে। আজও আমি স্যারের মৃত্যুর কারণটা কাউকে বলি নি। আর বলবও না। সকলের শ্রদ্ধার পাত্র মধ্যবিত্ত লোকটি তার যোগ্য সম্মান নিয়েই বেঁচে থাকুক সকলের হৃদয়ে। ভাল থাকবেন ,স্যার।

 

Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email
Previous Articleগৌরদীতে সংখ্যা লঘুর ঘড়ে আগুন। নিরুপায় হয়ে সাংবাদিকের দারে অবস্থান
Next Article বিদ্যুৎ-জ্বালানি নিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার হচ্ছে –বললেন ওবায়দুল কাদের।

Related Posts

বাবুগঞ্জে উত্তরণ সাংস্কৃতিক সংঘের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উৎসব উদযাপন

জুন ১৩, ২০২৫

তরুণ কবি রবিউল ইসলামের কবিতা “আড়িয়াল খাঁ নদী”

অক্টোবর ২২, ২০২৪

বাবুগঞ্জে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিযোগিতা

মে ২৬, ২০২৪

সম্পাদক ও প্রকাশক: রফিকুল ইসলাম রনি, ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: ইব্রাহিম রুবেল, প্রধান উপদেষ্টা: আলহাজ্ব সিরাজ উদ্দিন আহমেদ
যোগাযোগের ঠিকানা:
পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইলঃ +৮৮ ০১৭৮৬ ৬৯০২৭২
Email: info@dailyranggaprovat.com

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.