অনলাইন ডেস্ক।। ভারত থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আনা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভারতের শিলিগুঁড়ি থেকে বাংলাদেশের দিনাজপুরের পার্বতীপুর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের মাধ্যমে ডিজেল আসবে। এতে তেল পরিবহনের খরচ অনেকটা কমে যাবে।
আজ বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভারত সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেব, বাংলাদেশে জ্বালানি সংকট নিরসনে পাশে দাঁড়াবে ভারত। এ বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। এ ছাড়া ভারতের সঙ্গে এলএনজি আমদানির বিষয়েও কথা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, পাইপলাইন নির্মাণের ফলে জ্বালানি তেলের পরিবহন ব্যয় সাশ্রয় হবে এবং সহজে, দ্রুততম সময়ে ও প্রতিকূল পরিবেশেও দেশের উত্তরাঞ্চলের চাহিদা মোতাবেক ডিজেল ভারত হতে আমদানি করা যাবে। বর্তমানে ভারত হতে বার্ষিক ৬০-৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করা হয়। পাইপলাইনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে বার্ষিক প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল ভারত হতে আমদানি করা সম্ভব হবে। পার্বতীপুরে বর্তমানে স্টোরেজ ক্যাপসিটি ১৫ হাজার মেট্রিক টন। চলমান প্রকল্পের আওতায় ২৮ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন স্টোরেজ ক্যাপসিটি বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, জ্বালানি তেলের আমদানি উৎস বহুমুখীকরণের লক্ষ্যে ২৮ আগস্ট ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে জিটুজি ভিত্তিতে জ্বালানি তেল সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ফলে তুলনামূলক স্বল্প সময়ে ও সাশ্রয়ী মূল্যে ডিজেল, অকটেন, ফার্নেস অয়েল, এভিয়েশন ফুয়েল আমদানি করা সম্ভব হবে। ফলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।
এলএনজি আমদানির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বিশেষত খুলনা এলাকার বিদ্যুৎ ও অর্থনৈতিক অঞ্চলে গ্যাসের বিপুল চাহিদার কথা বিবেচনা করে। ক্রস-বর্ডার পাইপলাইনের মাধ্যমে ভারত হতে বাংলাদেশে আমদানির বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন আছে।
সফরের কিছু উল্লেখযোগ্য অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, কুশিয়ারা নদীর পানিবণ্টনে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, যার মাধ্যমে ১৫৩ কিউসেক পানি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত। সীমান্তে প্রাণহানির সংখ্যা শূন্যে নামিয়ে আনতে কাজ করতে দুই দেশ সম্মত হয়েছে। ভুটানের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ও অন্যান্য আন্তঃসীমান্ত রেল সংযোগে বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করা হবে।
তিনি বলেন, চিনি, পেঁয়াজ, আদা, রসুনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য রপ্তানি বন্ধের আগে বাংলাদেশকে আগাম বার্তা দিতে ভারত সরকার পদক্ষেপ নেবে। বাংলাদেশের মুজিবনগর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পর্যন্ত ঐতিহাসিক স্বাধীনতা সড়ক চালু করা হবে। নদীদূষণ এবং অভিন্ন নদ-নদীর ক্ষেত্রে নদীর পরিবেশ এবং নদীর নাব্যতা উন্নয়নের লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রেলওয়ে সেবার মান বাড়াতে আইটি সলিউশন বিনিময় করা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারি চুক্তি নিয়ে দুই দেশের বাণিজ্য কর্মকর্তাদের কাজ শুরু করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।