বিশেষ প্রতিনিধি।। রাজশাহীর পুঠিয়ায় ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে রহিমা আক্তার রেমি নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে । এ ঘটনায় ওই এলাকায় ঈদের আনন্দ যেন মূহুর্তে বিষাদে রূপ নিয়েছে।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) ভোররাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ওই গৃহবধুর নাম রহিমা আক্তার (রেমি)। নিহত গৃহবধুর রহিমা আক্তার রেমি, তিনি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার নিমতলা মন্ডল পাড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের মেয়ে এবং পুঠিয়া উপজেলার কাঠালবাড়িয়া এলাকার সায়েম আক্তার সাগরের স্ত্রী।
রাজশাহীর চারঘাট বাজারের সন্নিকটে ফকির মেলেটারির মোড়ে স্বামীর ভাড়া নেওয়া বাড়ির ২য় তলার বেডরুমের বেলকনির সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস নেয় রেমি।
এর আগে নিহত রেমি ফেসবুক লাইভে এসে তাদের পারিবারিক কলহের কথা তুলে ধরেন। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আব্দুর রহিম চারঘাট থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুঠিয়ার নিমতলা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২৩ মিনিটের ভিডিওতে রেমি বলেন, ‘কথা হইলো আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী কারা। প্রথমেই আমার বাবা ও ছোট (সৎ) মাকে বলি আমার প্রিয় মানুষটাকে (স্বামী) জেল, আইন-আদালতের পেছনে ঘুরাবা না। কারণ আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী তুমি (বাবা)। আজ যদি তুমি বিয়ে না করতে, আমার মাকে নিয়ে সংসার করতে তাহলে আমাকে নিয়ে এসব কথা বলার সাহস পেত না। জেল যদি কাউকে খাটতে হয় সে তোমার (বাবা)। সেটা একমাত্র তোমার। আর কারো না।’
আরও বলেন, ‘আমার হাজবেন্ডকে বলছি, তোমার নামে যদি কেউ এলিগেশন দেয় যে, তোমার মানসিক টর্চারে আমি মারা গেছি- তুমি তার নামে মামলা দিবা। ওর নামে দিবা মামলা, কারণ আমার বাবা মা ভালো হইলে কেউ সাহস পাইতো।
১২ মিনিট সময়কালের ভিডিওতে রেমি বলেন, আমি একটি বই লিখতে শুরু করেছিলাম। বইয়ের নাম রাখতে চেয়েছিলাম সুইসাইড। বই লেখা শেষ না করতেই আমি নিজেই সুইসাইড হয়ে গেলাম। বাবা-মা খারাপ হলে কিন্তু সন্তানরা খারাপ হয় না। এসব কথা শুনতে শুনতে বোর হয়ে গেছি। জীবন দিয়ে প্রমাণ করে দিতে চাই।
স্বামীর উদ্দেশে রেমি বলেন, তুমি সন্তানের বাবা-মায়ের দায়িত্ব পালন করবে। আমি তোমাদের দুজনকে খুব ভালোবাসি। তোমার যখন চাকরি ছিল না, বেকার ছিলে, তখন আমি তোমাকে ছেড়ে যাইনি। এখন তোমার চাকরি হয়েছে। যে নতুন জীবনসঙ্গী হবে তাকে সময় দিও।