
মানিক ঘোষ, ঝিনাইদহ:।। মায়ের সাথেই হাসপাতালে যাচ্ছিলেন কন্যা মারিয়া (১৫)। পথেই সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু হয় তার মা আলেয়া বেগমের। সেই দূর্ঘটনায় মেয়েটিরও কোমরের দু’পাশ ও একটি হাত ভেঙ্গে যায়। এখন সে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তাররা বলেছে, তার অপারেশন চিকিৎসার জন্য আরো প্রায় ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। কিন্তু হতদরিদ্র দিনমজুর বাবা কোথায় পাবেন এত টাকা। তাইতো বিনা চিকিৎসায় এখন পঙ্গু হাসপাতালের বেডে যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে মারিয়া। হৃদয়বিদারক ওই মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটির শিকার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার আগমুন্দিয়া গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর মধূ কাজির পরিবারে। স্ত্রীকে হারালেও মধু কাজী তার একমাত্র মেয়েকে বাঁচাতে বিত্তবান সমাজপতিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
হতদরিদ্র মধু কাজী বলেন, তিনি রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করেন। তার উপার্জনেই চলে তিন সদস্যের সংসার। বাবলা ও মোহন নামে বড় দুই ছেলে সন্তান থাকলেও তারা বিয়ের পরই শশুর বাড়ীতে ঘর জামাই রয়েছে। বাবা মা বোনের কোন খরচও দেয় না। মধু কাজী বলেন, এক ভাইয়ের দেওয়া ৪ শতক জমির উপরে ভীটে বাড়ী ছাড়া আর কিছুই নেই তার। রাজমিস্ত্রির জোগালের কাজ করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটে তাদের। তিনি আরো বলেন, মেয়ের চিকিৎসায় এ পর্ষন্ত ধার দেনা করে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ডাক্তাররা বলেছে মারিয়ায় অপারেশনে এখনো আরো প্রায় ৩ লাখ টাকা প্রয়োজন। দ্রুত এ টাকা জোগাড় করতে না পারলে মেয়েটি বিনা চিকিৎসায় পঙ্গুত্ববরন করতে পারে। তিনি বলেন, তার মেয়ের করুন অবস্থার কথা শুনে গ্রামবাসীদের অনেকেই এগিয়ে এসে গ্রাম থেকে কিছু সাহায্য তুলে দিয়েছেন। কিন্তু ওই বিপুল পরিমান টাকা যোগাড় করা সম্ভব হচ্ছেনা। এখন অর্থাভাবে মেয়েটির চিকিৎসা ও অপারেশন বন্ধ থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
গ্রামবাসী আগমুন্দিয়া গ্রামের আকতার হোসেন জানান, পরিবারটি একেবারেই হতদরিদ্র। অসহায় মেয়েটির করুন অবস্থার কথা শুনে গ্রামবাসিরা মিলে কিছু সাহাষ্যও তুলছেন। কিন্তু. ওই বিপুল অংকের টাকা জোগাড়ে সমাজের মানবিক দানশীল ব্যাক্তিদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজওয়ানা নাহিদ বলেন, সড়কে দূর্ঘটনায় এক মায়ের মৃত্যু ও আহত মেয়ের করুন অবস্থার কথা শুনেছি। তিনি বলেন, সরকারীভাবে দূর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় অনুদান প্রদানে যথাসাধ্য ব্যবস্থা নিবেন বলে যোগ করেন তিনি।

