রাঙা প্রভাত ডেস্কঃ- পদ্মার প্রবল স্রোতে গতকাল দুপুরে মাওয়া শিমুলিয়ায় বিআইডব্লিউটিএর তিন নম্বর ফেরিঘাট নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় ১টানা মাসব্যাপী বন্যা আর নদীভাঙনে শিশু, বৃদ্ধ, গবাদি পশু নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে লাখ লাখ মানুষ। আশ্রয় কেন্দ্র, উঁচু সড়ক ও বাঁধে আশ্রয় নিয়ে গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগির সঙ্গে গাদাগাদি করে বসবাস করছেন বানভাসিরা। সংকট রয়েছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের। অন্যদিকে টানা বন্যায় ফসল নষ্ট হওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক।
মাছের ঘের ভেসে যাওয়ায় পথে বসেছেন অনেক মাছচাষি। পাশাপাশি নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে রাতারাতি আমির থেকে পথের ফকির হয়ে গেছে অনেক পরিবার। মাত্র ২০ মিনিটে চোখের সামনে নদীগর্ভে চলে যেতে দেখেছেন পূর্বপুরুষের রেখে যাওয়া সম্পত্তি, তিল তিল করে গড়া নিজের ঘরবাড়ি। তারাও এখন পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু সড়ক ও বাঁধে। পথ চেয়ে আছেন সরকারি ত্রাণের জন্য। আমাদের প্রতিনিধি জানান, তিন দফা বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে নদীভাঙনের শিকার হয় ঘরবাড়ি হারিয়ে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে ঝুপড়ি তুলে মানবেতর জীবন পার করছেন।
সিমলা গ্রামের হারুন অর রশিদ তালুকদার এক সপ্তাহ আগেও ছিলেন এলাকার একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। নিজ বাড়িতে ছিল ১২টি কাঁচাপাকা ঘর। ঘরভর্তি দামি আসবাব। গত শুক্রবার বিকালে হারুনের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়। শুধু পরনের লুঙ্গিটি নিয়ে তিনি ঘর থেকে বের হতে পারেন। মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে হারুন সবকিছু হারিয়ে পথের ফকির হয়ে যান। তার মতো ওই এলাকার আরও অন্তত ৫০ পরিবারের একই অবস্থা। হাজার হাজার মুরগিসহ বিলীন হয়ে গেছে খামার। এসব পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে ত্রাণবাহী গাড়ি
এদিকে এখনো দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে পারছে না। অনেক নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সহসাই বন্যা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা নেই। পানির চাপে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, এক দিনের ব্যবধানে গতকাল সকালেও ১০১টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের ৪৩টিতে পানি বৃদ্ধি পায়। ১৮টি নদীর পানি ২৯টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে শুরু করলেও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তিস্তা, ধরলা ও ঢাকা জেলার আশপাশের নদীসমূহের পানি। আজ তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পাউবোর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য- রাজবাড়ী : পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের দুটি ঘাটের সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। দৌলতদিয়া প্রান্তের ছয়টি ঘাটের মধ্যে গত বছর নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি ঘাট গতকালও বন্ধ ছিল। শুধু ঘাট সংকটের কারণে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ পরিস্থিতিতে গতকাল দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারও হাত নেই। যত দ্রুত সম্ভব ঘাটগুলো সচল করা হবে। টাঙ্গাইল : যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমার পরও গতকাল তা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি গতকালও বৃদ্ধি পায়। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত জেলার ১১টি উপজেলার ৮৩টি ইউনিয়নের ৬৫২টি গ্রাম ও ছয়টি পৌর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নওগাঁ : আত্রাই নদীর উপচে পড়া পানিতে নওগাঁয় প্রায় ৬০০ বিঘা জমির পাট ডুবে গেছে। এতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষক। জানা গেছে, উপজেলার পারকাসুন্দা, খনজোর ও জয়সাড়াসহ বিভিন্ন মাঠে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পাট পচে যাচ্ছে। যে মুহূর্তে কৃষকরা পাট কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেই মুহূর্তে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েক স্থান ধসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সিমলা গ্রামের হারুন অর রশিদ তালুকদার এক সপ্তাহ আগেও ছিলেন এলাকার একজন সম্পদশালী ব্যক্তি। নিজ বাড়িতে ছিল ১২টি কাঁচাপাকা ঘর। ঘরভর্তি দামি আসবাব। গত শুক্রবার বিকালে হারুনের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যায়। শুধু পরনের লুঙ্গিটি নিয়ে তিনি ঘর থেকে বের হতে পারেন। মাত্র ২০ মিনিটের ব্যবধানে হারুন সবকিছু হারিয়ে পথের ফকির হয়ে যান। তার মতো ওই এলাকার আরও অন্তত ৫০ পরিবারের একই অবস্থা। হাজার হাজার মুরগিসহ বিলীন হয়ে গেছে খামার। এসব পরিবার এখন খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। অপেক্ষায় থাকে কখন আসবে ত্রাণবাহী গাড়ি
এদিকে এখনো দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বন্যাকবলিত এলাকাগুলো থেকে পানি নামতে পারছে না। অনেক নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় সহসাই বন্যা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা নেই। পানির চাপে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, এক দিনের ব্যবধানে গতকাল সকালেও ১০১টি পর্যবেক্ষণাধীন পানি সমতল স্টেশনের ৪৩টিতে পানি বৃদ্ধি পায়। ১৮টি নদীর পানি ২৯টি স্টেশনে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস পেতে শুরু করলেও বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে তিস্তা, ধরলা ও ঢাকা জেলার আশপাশের নদীসমূহের পানি। আজ তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে পাউবোর পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্য- রাজবাড়ী : পদ্মা নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের দুটি ঘাটের সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। দৌলতদিয়া প্রান্তের ছয়টি ঘাটের মধ্যে গত বছর নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত দুটি ঘাট গতকালও বন্ধ ছিল। শুধু ঘাট সংকটের কারণে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ফেরির নাগাল পেতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। এতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ পরিস্থিতিতে গতকাল দৌলতদিয়া ফেরিঘাট পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর কারও হাত নেই। যত দ্রুত সম্ভব ঘাটগুলো সচল করা হবে। টাঙ্গাইল : যমুনা নদীর পানি ১০ সেন্টিমিটার কমার পরও গতকাল তা বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ঝিনাই ও ধলেশ্বরী নদীর পানি গতকালও বৃদ্ধি পায়। জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে প্রায় ছয় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত জেলার ১১টি উপজেলার ৮৩টি ইউনিয়নের ৬৫২টি গ্রাম ও ছয়টি পৌর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নওগাঁ : আত্রাই নদীর উপচে পড়া পানিতে নওগাঁয় প্রায় ৬০০ বিঘা জমির পাট ডুবে গেছে। এতে ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছে কৃষক। জানা গেছে, উপজেলার পারকাসুন্দা, খনজোর ও জয়সাড়াসহ বিভিন্ন মাঠে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পাট পচে যাচ্ছে। যে মুহূর্তে কৃষকরা পাট কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, সেই মুহূর্তে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েক স্থান ধসে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।