প্রিয়ন্তি—৪
সৈয়দা নূরে কাছেদা
ভোরের আলোর আলতো ছোয়া চারিধারে
জননী জন্মভূমি সরব হয়নি এখনো
মৃদুমন্দ বাতাস বইছে
কাপন লেগেছে কোন ঝিলের পারে!
বৃক্ষে অন্তরিক্ষে ভূতলে নদীজলে রূপের ছটা
মনবৃন্তে যেন থোকা থোকা ফুল ফোটা।
গাড়ী থেকে নেমে গন্তব্যে স্বপ্ন নীলা রহমান
বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙন শান্তির আবহে শয্যায়
লাইব্রেরীর ঘোড়ানো সিরি ভেঙে যাত্রা সমাপন।
ভেতরে এসে দৃষ্টি পড়ে স্কাই ব্লু টিশার্ট জিনস
পরিধানে এক যুবক সুদর্শন,আপ্ত নিশানায় তন্ময়
বই ছড়িয়ে ছিটিয়ে নিমগ্ন বইয়ের পাতায়, কী প্রত্যয়
এ ধরিত্রীতে নেই সে যুবক জ্ঞান সমুদ্র মন্থনে
চৈতন্য বিলুপ্ত গ্রন্থ অগননে, কী সন্মোহনে—
স্বপ্ন চারিধার নিরিক্ষন শেষে বসে এককোনে।
পিন পতন নিঃস্তব্দতায় জ্ঞান রাজ্যে সব নুড়ি কুড়ায়
শান্ত মনে সেলফের বই তুলোধুনো শেষে হতাশায়
অশান্ত মন পরাস্ত,বসে পড়ে স্বপ্ন স্বেদবিন্দু গৌর
ললাটে দখল নেয় ভীষণ দাপটে—-
অনতিদূরে সেই রাউন্ড টেবিলের অধিপতি
ধ্যান মগ্নতায় চিত্ত রেখেছে একাগ্রতায় এখন অবধি
ক’ঘন্টা পেরিয়ে যায়,কাংখিত গ্রন্থ পাবে কোন
ঠিকানায় —-
লাইব্রেরীর কোনে সাহায্যকারী বসে একমনে
সালাম জানিয়ে সাহায্যের হাত বাড়ায়–
যেন ধন্বন্তরী সাক্ষাৎ,কি বই ম্যাডাম!
গ্রন্থ ক’টির নাম জেনে,অন্ধকার নামে আননে
ঐ টেবিলে স্যারের কাছে একটি করে কপি!
হঠাৎ স্বপ্ন জ্বলে ওঠে যেন বিদ্যুতের চমক
রাগান্বিত গন্ডদ্বয় লাল আভায় ঝরায় ঝলক!
স্বগোক্তি, এ কেমন বাড়াবাড়ি, সব কটা গ্রন্থে
দখলদারী!
স্বপ্ন ভীষণ ব্যাস্ততায়,যুবকের সামনে এসে দাড়ায়!অবয়বের অস্বাভাবিকতা ঢাকে স্নিগ্ধতার প্রসাধনে
কৃতিম হাসির ঢেউ তুলে সুস্পষ্ট উচ্চারণে
বলে Excuse me?
যুবক মুখ নামিয়ে লিখছেই লিখেছেই একমনে
অগত্যা কন্ঠ বাড়িয়ে নিজস্ব সীমার গন্ডি ছাড়িয়ে
আওয়াজ তোলে Excuse me?
যুবকের মনে হয় এই শরতের প্রাতে কোন কোকিল
মাতে এমন সুরের ভেলায়,বড় অবেলায়—
অপূর্ব চোখ তোলে দেখে শেউতি শুভ্র এক নারী
বিদেশি উচ্চারণে কুহরণ তোলে কানে
যেন এখনি এলো দিয়ে বিদেশ পাড়ি
আরে এ যে প্রিয়ন্তি..