বিশেষ প্রতিনিধি।। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিয়ের দেড় মাসের মাথায় এক স্কুলছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় মেয়েটি উপজেলার নারচি ইউনিয়নের কুপতলা গ্রামে বাবার বাড়িতে বিষপান করে। সোমবার ১১ অক্টোবর ভোরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত স্কুলছাত্রীর নাম সম্পা আকতার (১৫)। সে কুপতলা গ্রামের আবুল হোসেনের মেয়ে এবং সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
শিক্ষক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাস দেড়েক আগে সম্পার ইচ্ছার বিরুদ্ধে গাবতলী উপজেলার গোড়দহ গ্রামের শাহীন মিয়া (৪৫) নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া হয়। শাহীন পেশায় পোশাককর্মী। বয়সের ব্যবধান বেশি থাকায় দুজনের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় সম্পা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। বাল্যবিবাহ দেওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করায় পরিবারের লোকজন সম্পাকে কড়া ভাষায় শাসন করেন। অভিমানে সম্পা গতকাল রোববার সন্ধ্যায় বিষ পান করে। পরিবারের লোকজন প্রথমে সারিয়াকান্দি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সোমবার সকালে সম্পা মারা যায়।
সারিয়াকান্দি পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাকি মো. জাকিউল আলম বলেন, সম্পা মেধাবী ছাত্রী ছিল। করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মাস দেড়েক আগে মেয়েটিকে তার পরিবারের লোকজন ইচ্ছার বিরুদ্ধে বয়স্ক পাত্রের সঙ্গে বিয়ে দেন। ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল খোলার পর সম্পার বিয়ের বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। মেয়েটি বাল্যবিবাহ মেনে না নেওয়ায় রোববার সন্ধ্যায় বিষপান করে। সোমবার সকালে মারা যায়। সোমবার দুপুরে আত্মহত্যার বিষয়টি জানার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত হন। বাল্যবিবাহের বলি মেধাবী এই স্কুলছাত্রী জীবন দিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে গেল। এটা খুবই মর্মান্তিক।
এ বিষয়ে সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, সম্পা নামে একটি মেয়ে বিষপান করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। সদর থানা থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, থানায় কারও কোনো অভিযোগ আছে কিনা। কারও কোনো অভিযোগ নেই বলে জানানো হয়। তবে মেয়েটি বাল্যবিবাহের কারণে আত্মহত্যা করেছে কি না, এমন তথ্য জানা নেই।