অনলাইন ডেস্ক।। সাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘মানদৌস’, বন্দরে সতর্ক সংকেত
দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এই নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তরের দিকে অগ্রসর হয়ে বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড় মনদৌসে পরিণত হয়েছে। মানদৌসের নামটি দিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। আরবি মানদৌস অর্থ হলো—গয়না বা ধনদৌলতের বাক্স। গতিপথ যদি না বদলায় তবে মানদৌস ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদগণ। তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশের উপকূলভাগে বৃষ্টি হতে পারে। মানদৌসের প্রভাব কেটে যাওয়ার পর বাংলাদেশে শীতের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে জানান আবহাওয়া বিশ্লেষকরা।
আমেরিকার কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইডি গবেষক ও আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলোর সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে ঘূর্ণিঝড় মানদৌস আজ ৮ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর থেকে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের চেন্নাই সমুদ্রবন্দরের উপকূলের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানার প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। এই ঘূর্ণিঝড়টি কম শক্তিশালী হবে। বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ উঠতে পারে ঘণ্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। যেহেতু আজ ৮ ডিসেম্বর পূর্ণিমা তাই স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে আট ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে অন্ধ্রপ্রদেশের উপকূলীয় এলাকা।
তিনি বলেন,সম্ভাব্য এই ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণে সরে যাওয়ার কারণে আপাতত বাংলাদেশের ওপর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সৃষ্ট মেঘের বহিঃস্থ বৃষ্টিবলয় যা মেঘের ঘূর্ণনের কারণে সৃষ্টি হয় তা উত্তর দিকে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে অগ্রসর হবে ও বাংলাদেশের আকাশেও হালকা মেঘের উপস্থিতি দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এদিকে আবহাওয়ার দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি ডিসেম্বর মাসে বঙ্গোপসাগরে এক বা দুটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে। যার মধ্যে একটি রূপ নিতে পারে নিম্নচাপে। এ মাসে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে পারে, তবে তাপমাত্রা প্রধানত স্বাভাবিক থাকতে পারে।
পূর্বাভাসে আরো বলা হয়েছে, এ মাসের শেষার্ধে দেশের কোথাও কোথাও একটি থেকে দুটি মৃদু (৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বা মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপমাত্রার শৈত্য প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ মাসে দেশের নদী অববাহিকায় ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন এবং অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।
আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, চলতি সপ্তাহে রাতের তাপমাত্রা আরো কিছুটা কমে যেতে পারে। চলতি মাসের শেষ দিকে সারা দেশের ওপর দিয়ে একটি মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।