রাঙা প্রভাত ডেস্ক:- বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলার মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনের জন্য কাজ করে এসেছে। আওয়ামী লীগই একমাত্র দল, যারা এদেশের মানুষের ভাষার অধিকার ও স্বাধীনতা দিয়েছে। তাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য কাজ করছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশের মানুষকে কিছু দিতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলাই আওয়ামী লীগের লক্ষ্য। সেই স্বপ্নের পথেই দেশ এগিয়ে চলেছে।
দলীয় নেতাকর্মীদের ত্যাগের আদর্শে রাজনীতি করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, জাতির পিতা তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে বলেছেন, ‘নীতিবিহীন নেতা নিয়ে অগ্রসর হলে সাময়িকভাবে কিছু ফল পাওয়া যায়। কিন্তু সংগ্রামের সময় তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।’ এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বাস্তবতা। যিনি ত্যাগ স্বীকারে প্রস্থুত থাকতে পারেন, তিনি সফল হতে পারেন। দেশ ও জাতিকে কিছু দিতে পারেন।
শুক্রবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের সবচাইতে প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। বিকেলে দলের দু’দিনের এ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ভাষণে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার ইতিহাস এবং ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের সব গণতান্ত্রিক ও মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন-সংগ্রামে দলটির গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্য নিয়ে। আওয়ামী লীগ জন্ম থেকেই মানুষের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছে। এই দলটি ক্ষমতায় থেকে গড়ে ওঠা দল নয়। বরং মাটি ও মানুষের ভেতর থেকে মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য প্রতিষ্ঠিত দল।
আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে গত ৭০ বছরে নানা প্রচেষ্টা ও ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এ দলের ওপর আঘাত এসেছে বারবার। এই দলকে শেষ করার চেষ্টাও হয়েছে বারবার। জাতির পিতাকেও কতবার হয়রানি করা হয়েছে, মিথ্যা মামলা হয়েছে, ফাঁসির আদেশ হয়েছে। তারপরও তিনি সততার সঙ্গে এগিয়ে গিয়েছিলেন বলেই বাঙালি একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, যখনই আঘাত এসেছে, সবার আগে এসেছে আওয়ামী লীগের ওপর। ইয়াহিয়া, আইয়ুব খান, জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া- যে যখন ক্ষমতায় এসেছেন, আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন ও ধ্বংস করতে বারবার আঘাত হেনেছেন, নানা ষড়যন্ত্র করেছেন। তবে আওয়ামী লীগের সাময়িক কিছু ক্ষতি করতে পারলেও জাতির পিতার হাতে গড়া এই সংগঠনকে কেউ ধ্বংস বা নিশ্চিহ্ন করতে পারেনি। বরং সব আঘাত ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই আওয়ামী লীগ এখন দেশের সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সংগঠন।
মঞ্চের ডান পাশে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। এ সময় ৫০ জন শিল্পী সমবেত কণ্ঠে পরিবেশন করেন জাতীয় সংগীত। সংগঠনের পতাকা উত্তোলন করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন দলের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরাও। এরপর শান্তির প্রতীক কবুতর এবং রং-বেরঙের বেলুন ওড়ান শেখ হাসিনা। তাকে অনুসরণ করে কবুতর ও বেলুন ওড়ান সাংগঠনিক জেলার প্রধান নেতারা। পরে প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উঠলে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন। পদ্মার বুকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে তৈরি মঞ্চ থেকে হাসিমুখে হাত নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান শেখ হাসিনা।
এরপর দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলের উপস্থাপনায় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়। এতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের পাশাপাশি দেশবরেণ্য শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশিত হয়েছে, ‘সাড়ে সাত কোটি মানুষের আরেকটি নাম মুজিবর, মুজিবর’, ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার খ্রিষ্টান, বাংলার মুসলমান- আমরা সবাই বাঙালি’ এবং ‘জয় বাংলা বাংলার জয়, হবে হবে হবে নিশ্চয়’ শীর্ষক সংগীত। পরে ‘তোমারই হোক জয়’ শীর্ষক ২৮ মিনিটের গীতিনৃত্যালেখ্যের মাধ্যমে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম, ইতিহাস-ঐতিহ্য, আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, বঙ্গবন্ধু সরকারের দেশগড়ার সংগ্রাম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও সাফল্য তুলে ধরা হয়। লিয়াকত আলী লাকীর গ্রন্থনা ও পরিকল্পনায় অনুষ্ঠানে শিবলী মোহাম্মদ ও শামীম আরা নীপা ছাড়াও প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পীরা অংশ নেন।
পরে পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক থেকে পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা। দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিশিষ্ট-বরেণ্য ব্যক্তিসহ দলের নেতাকর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করেন দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। এ সময় তাদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সম্মেলন উপলক্ষে গঠিত অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিমের স্বাগত বক্তব্যের পর সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন ওবায়দুল কাদের। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশন পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে সন্ধ্যায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনমঞ্চ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশন হবে। এই অধিবেশনেই আগামী তিন বছরের জন্য দলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।
বিকেল ৩টায় সম্মেলন উদ্বোধনের নির্ধারিত সময়ের অনেক আগ থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথিসহ দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই সম্মেলনস্থল জনারণ্যে রূপ নেয়। গোটা সম্মেলনস্থল ছিল জাঁকজমকপূর্ণ, উৎসবমুখর ও আনন্দঘন পরিবেশ। নেতাকর্মীরা সার্বক্ষণিকভাবে বিভিন্ন রকম ¯েøাগানে মুখর ছিলেন।
উদ্বোধনী ভাষণে সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে সরকারের উন্নয়ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এক দশক ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই এক দশকেই বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, দারিদ্র্যের হার ২০ দশমিক ৫ ভাগে নেমেছে। জাতির পিতা স্বল্পোন্নত দেশ রেখে গিয়েছিলেন। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এটাকে ধরে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য সামনে আরও এগিয়ে যাওয়া। যে ত্যাগ স্বীকার করতে পারে, সেই সফল হয়। এ কাজটা আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বেশি করেছে। এজন্যই জনগণ কিছু পেয়েছে।
সারাদেশে দলকে সুসংগঠিত করে তোলার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় সম্মেলনের পর যেসব জেলার সম্মেলন বাকি আছে সেগুলোও শেষ করা হবে। জেলা, উপজেলা, থানা এমনকি ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সর্বস্তরে সম্মেলন করা হবে। কাউন্সিলের মধ্য দিয়েই সংগঠন চাঙ্গা হয়, সংগঠন শক্তিশালী হয়। সেভাবেই দলকে গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রী তার আধা ঘণ্টার ভাষণের শুরুতে সম্মেলনে আসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিসহ সমবেত কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও অতিথিদের অভিনন্দন এবং বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের সব শহীদ, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। একই সঙ্গে তিনি আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, মওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশসহ দলের প্রয়াত নেতাদের স্মরণ করেন।
১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পঁচাত্তরে বাবা-মা সবাইকে হারিয়েছি। আমরা দু’বোন শুধু বেঁচে ছিলাম। ছয়টি বছর দেশে ফিরতে পারিনি। এরপর দেশে ফিরেছি নিঃস্ব, রিক্ত হয়ে। কিন্তু দেশে ফিরে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি।
এ প্রসঙ্গে ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগ সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, রাজনীতি তার কাছে নতুন কিছু নয়। স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন তিনি। স্কুলের দেয়াল টপকে মিছিল-মিটিংয়ে অংশ নিয়েছেন। কলেজ জীবনেও ছাত্র রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। কলেজ সংসদের ভিপিও ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও রাজনীতি ও আন্দোলন-সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। কখনও চিন্তাই করেননি এত বড় একটি দলের নেতৃত্ব দিতে হবে, এত বড় একটি দায়িত্ব পালন করতে পারবেন তিনি। তবে দায়িত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছেন। সারাদেশে ঘুরে ঘুরে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত করে তুলেছেন তিনি। আজকে আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বড় ও শক্তিশালী সংগঠন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পঁচাত্তরের পর যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা জনগণের জন্য কিছুই করতে পারেনি। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে গড়ে ওঠা বিএনপিও জনগণের জন্য কিছু করতে পারেনি। বরং ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় থেকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, হত্যা-খুন সবই করেছে। তাদের আমলে এই দেশ পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, গ্রেনেড-বোমা হামলা, দুই সংসদ সদস্যকে হত্যা, আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর ওপর অমানুষিক নির্যাতন কিছুই বাদ রাখেনি তারা।
তিনি বলেন, যারা একাত্তরে গণহত্যা করেছে, যারা যুদ্ধাপরাধী- তাদের নিয়ে জোট করে বিএনপি সন্ত্রাস করেছে। তারা ক্ষমতায় থাকতে সন্ত্রাস করে, বিরোধী দলে থাকলেও সন্ত্রাস করে। তাদের এই সন্ত্রাস ছিল অগ্নিসন্ত্রাস। পাঁচ শতাধিক মানুষকে তারা আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। অনেক মানুষের জীবন নষ্ট করে দিয়েছে। তারা নিজেরা নির্বাচনে আসবে না। আর আসবে কীভাবে? ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ২৯টি সিট পেয়েছিল। এ কথা বিএনপি ভুলে যায়। কিন্তু ওই নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলতে পারেনি।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের এই সম্মেলনে ১০২ ফুট লম্বা এবং ৪০ ফুট চওড়া মূল মঞ্চটি নির্মাণ করা হয় পদ্মার বুকে পাল তোলা নৌকার আদলে। মঞ্চের পেছনে জাতীয় স্মৃতিসৌধের প্রতিকৃতি ছাড়াও প্রদর্শিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী, জাতীয় চার নেতা, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সভাপতি মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শামসুল হকের ছবি। সম্মেলন প্রাঙ্গণেও ছিল অসংখ্য ছোট-বড় নৌকা, নেতাদের প্রতিকৃতি এবং দলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রদর্শন। মঞ্চ ও আশপাশের ২৮টি এলইডি পর্দায় সম্মেলন প্রদর্শিত হয়। সম্মেলন উপলক্ষে খোলা ওয়েবসাইটে পুরো কার্যক্রম সরাসরি প্রচার করা হয়েছে।
বিশালাকার সম্মেলন মঞ্চে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ছাড়াও আরও ছিলেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যরা এবং সভাপতিন্ডলী ও সম্পাদকমণ্ডলীসহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা। সামনের বিশাল প্যান্ডেলে ছিলেন কাউন্সিলর ও ডেলিগেটসহ সম্মানিত অতিথিরা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি ১৪ দলীয় জোট নেতা, বুদ্ধিজীবী, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও পেশাজীবীসহ বরেণ্য ব্যক্তিরা সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় তারা ছিলেন বেশ হাস্যোজ্জ্বল।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়াসহ মন্ত্রি-প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও সংসদ সদস্যরাও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কাজী ফিরোজ রশিদ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়া, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পংকজ ভট্টাচার্য, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণফোরামের সাবেক নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ প্রমুখ। আমন্ত্রণ সত্ত্বেও বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রতিনিধি সম্মেলনে যোগ দেননি।
সম্মেলন প্রাঙ্গণসহ আশপাশের এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল। কঠোর তল্লাশির পর সবাই সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করেন। সম্মেলনস্থলের ভেতরে-বাইরে দুই হাজার স্বেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি এসএসএফ, পিজিআর, র্যাব, পুলিশসহ রাষ্ট্রের নিরাপত্তা এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তাসহ শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। তাদের সঙ্গে ছিল বেশ কয়েকটি মেডিকেল টিম ও অ্যাম্বুলেন্স। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়।